scorecardresearch
 

Mohammad Habib: ভালো খেলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল, আক্ষেপে থুতু নিজের মুখেই মেখেছিলেন হাবিব

প্রয়াত ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা মহম্মদ হাবিব। মঙ্গলবার ৭৪ বছর বয়সে জীবনাবসান হয় প্রাক্তন ফুটবলারের। বিকেল সাড়ে ৪টেয় হায়দরাবাদে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

Advertisement
মহম্মদ হাবিব মহম্মদ হাবিব

প্রয়াত ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা মহম্মদ হাবিব। মঙ্গলবার ৭৪ বছর বয়সে জীবনাবসান হয় প্রাক্তন ফুটবলারের। বিকেল সাড়ে ৪টেয় হায়দরাবাদে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 


ভারতীয় ফুটবলে ‘বড়ে মিঞা’ হিসেবে পরিচিত তিনি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৬৬ সালে হায়দারাবাদ থেকে ইস্টবেঙ্গলে সই করা হাবিবকে নিয়ে অনেক গল্প ময়দানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কলকাতায় আসার পর ১৮ বছর ধরে তিন প্রধানে দাপিয়ে খেলেছেন তিনি। ১৯৭৭ সালে পেলের কসমসের বিরুদ্ধে মোহনবাগান দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন হাবিব। ১৯৭০ সালে এশিয়ান গেমসের ব্রোঞ্জ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। 

একবার কলকাতা লিগের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ড্র করেছিল। চারিদিক থেকে গালিগালাজ করছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। হঠাৎ, দু হাতের তালুতে থুতু ফেলে নিজের মুখে মেখে নেন হাবিব মিঞা। কেন এমনটা করলেন তিনি? জিজ্ঞাসা করতে ইস্টবেঙ্গলের তৎকালীন কর্তা অজয় শ্রীমানিকে হাবিব বলেন, ‘আজ আমরা যা খেলেছি, তাতে নিজেদের মুখে থুতু মাখাই উচিত!’ 

আরও পড়ুন

২০১৯ সালে শেষবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসেছিলেন। বাড়ি হায়দরাবাদ হলেও ফুটবল কেরিয়ারের পুরোটাই কেটেছে কলকাতায়। ইস্টবেঙ্গলে খেলার সময় তিনি ১১৩ টি গোল করেন। ১৯৭০-৭৪ সালে হাবিব যখন ইস্টবেঙ্গলে তখন ১৯৩২ দিন কলকাতা ডার্বিতে পরাস্ত হয়নি লাল হলুদ। মাঝে সময়টা ছিল পাঁচ বছর। এই সময় মোট ১৩টা ট্রফি জিতেছিল লাল হলুদ। 

কোচিং জীবনেও তাঁর হাত ধরে উঠে এসেছেন একাধিক তারকা ফুটবলার। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন, গোলরক্ষক সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় তেমনই রয়েছেন গৌতম ঘোষ, অলোক দাস, সুর কুমার সিং-এর মতো ফুটবলাররা। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেই সময় টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি বড় দলগুলিকেও বেগ দিত। কোচিং করিয়েছেন মহামেডান স্পোর্টিং-এও। 

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য তাঁর প্রয়াণের খবর শুনে বাকরুদ্ধ। তিনি বলেন,’পুরো দিনটাই খারাপ হয়ে গেল রে। আমরা আমাদের নেতাকে হারালাম। কী বলব। আমি যখন প্রথম মোহনবাগানে খেলতে এলাম তখন ক্লাবের মেসে থাকতাম। মেসে আমাদের অভিভাবক ছিলেন হাবিব দা। খেলার বাইরে অন্য কিছুতে মন দিলেই হাবিব দা রেগে যেত শাসন করত। রাত ন’টার পরে কোনও ফুটবলারকে জেগে থাকতে দেখলে বা বাইরে দেখলে প্রচণ্ড শাসন করত। আমাকে তো চ্যালা কাঠ দিয়ে একবার মেরেছিল। প্র্যাকটিসেও অক্লান্ত। নিয়মানুবর্তিতার শেষ কথা। প্রতিপক্ষ যত বড়ই হোক না কেন ড্রেসিংরুমকে তাতিয়ে তোলার কাজটা করত হাবিব দা। কসমসের বিরুদ্ধে খেলার দিন প্রদীপ দাকে বলেছিল স্কোরবোর্ড শূন্য থেকে শুরু হয়। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। হাবিব দা যদি না থাকত আমি হয়তো হারিয়ে যেতাম। মনটা খারাপ হয়ে গেল। বিশ্বাস করতে পারছি না।‘ 

সমসাময়িক ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম গৌতম সরকার স্তম্ভিত খবরটা শুনে। ‘ক্লাব থেকে ভারতীয় ফুটবল কত ম্যাচ আমরা এক সঙ্গে খেলেছি। কত বড় ফুটবলার ছিল তা কথায় বোঝানো সম্ভব নয়। নিয়মানুবর্তিতায় শেষ কথা। একজন খেলোয়াড়ের শেষ কথা নিয়মানুবর্তিতা। হাবিব ভাই সেখানে নিজেও কঠোর এবং তার সঙ্গে যারা খেলতেন তাদের জন্য একই রকম কড়া মানসিকতার। কোনও বেচাল করার সাহস হত না আমাদের। প্রতিপক্ষের নাম নয় মাঠে নেমে লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে মাপতেন। সবাইকে চলে যেতে হয়। হাবিব ভাইও চলে গেলেন। মেনে নিতেই হবে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।‘ 


 
 

Advertisement