মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে আইএসএল ফাইনালে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়ল ছোট্ট মোহনবাগান সমর্থক রাজঋষি। আইএসএল ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পর ভাইরাল হয়েছিল রাজঋষির উচ্ছ্বাসের ভিডিও। আর এদিন ফাইনাল হেরে যাওয়ার পর তার কান্নার ভিডিও ভাইরাল। সান্ত্বনা দিতে সেই ভিডিওতে কমেন্ট করছেন মোহনবাগান সমর্থকরা। কিন্তু তাতেও যেন দুঃখ কমছে না রাজঋষির। টিকিট না পাওয়ায় ফাইনাল ম্যাচ দেখতে যুবভারতীতে যাওয়া হয়নি। তবে প্রিয় দলেক সমর্থন করতে টিভির সামনে বসেছিল খুদে ফ্যান।
মোহনবাগান ১-২ গোলে পিছিয়ে পড়তেই চোখের জল বাঁধ মানেনি। 'শেষ ৫ মিনিটে ২ গোল করতে হবে।' এই বলে কাঁদতে শুরু করে সে। বাড়ির সকলেই তাকে সান্ত্বনা দিলেও থামছিলই না রাজঋষি। পোস্ট করা ভিডিওতে তার কাকিমা লেখেন, 'স্বপ্নভঙ্গ ইচ্ছে ছিল জেতার আনন্দে মাতোয়ারা রাজঋষির ভিডিও পোস্ট করার, বাট বেটার লাক নেক্সট টাইম...' মাটিতে শুয়ে ছোট্ট ফুটবল ফ্যানের এই কান্নার ভিডিও এখন ভাইরাল।
শনিবারের ম্যাচে আগাগোড়া দাপট ছিল মুম্বইয়ের। মোহনবাগানের ডিফেন্সকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও প্রথম গোলটা করে যায় মোহনবগানই। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে মুম্বই গোলকিপার পূর্বা লাচেনপার ভুলে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। গোল করেন অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স। দিমিত্রি পেত্রাতোসের দুরপাল্লার শট মুম্বইয়ের গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও ঠিক জায়গায় ফিস্ট করে বল রাখতে পারেননি। ছোট্ট টোকায় বল জালে জড়ান কামিন্স। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরত আসে মুম্বই। অ্যালবার্তো নোগুয়েরার ভাসানো লম্বা বল মাঝ বরাবর দিয়াজের পায়ে আসে। তিনি মনবীর সিংকে কাটিয়ে প্রথম গোলটা করেন। সেই সময় মোহনবাগানের ডিফেন্ডাররা একেয়ারেই জায়গায় ছিলেন না।
৮১ মিনিটে বিপিন সিং মুম্বইকে এগিয়ে দেন। বিক্রম প্রতাপ সিং এবং লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে ও বিনীত রাই ছোট ছোট পাস খেলে উপরের দিকে উঠে আসেন। ছাংতে শট করলেও তা প্রতিহত হয়ে ফিরে আসছিল। সেইসময় জ্যাকুবের বল পেয়ে বিপিনের দিকে বাড়ান। গোল করে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন তিনি। অতিরিক্ত সময়ে মুম্বইয়ের হয়ে তৃতীয় গোলটা করলেন জ্যাকুব ভোতজাস। মোহনবাগানের ফাঁকা ডিফেন্সকে নিয়ে ছেলেখেলা করেন মুম্বই ফুটবলাররা।
অনেক আশা নিয়ে প্রায় ৬২,০০০ দর্শক মাঠে এলেও, শেষ বাঁশি বাজার আগেই মাঠ ফাঁকা হতে শুরু করে। হতাশ সবুজ-মেরুন সমর্থকরা হেরে যাবেন জেনেই বাড়ির পথ ধরেন। এই মরসুমে এমন দৃশ্য এর আগে দেখা যায়নি। ম্যাচের পরেও দলের খেলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় কোচ আন্তনিও লোপেজ হাবাসকে। হতাশা ঝরে পড়ছিল এই মরসুমে দারুণ ফুটবল খেলা দিমিত্রি পেত্রাতোসের গলাতেও।