রাত পোহালেই দীপাবলি। রাবণ বধ করে অযোধ্যায় ফিরেছিলেন রঘুনন্দন।মহাকাব্যের নায়ক। পরাক্রম, পৌরুষশক্তিতে অসাধ্য সাধন করেছিলেন। আজ, রবিবার মেলবোর্নে তৈরি হল আর এক মহাকাব্য। যে মহাকাব্যের নায়ক কিং কোহলি। ক্রিকেট দুনিয়া বলছে,'অবিশ্বাস্য, অতিমানবীয়।' আর ভক্তরা মন্ত্রমুগ্ধ। মাঠে শব্দব্রহ্ম,'কোহলি, কোহলি।'নায়ককে কোলে তুলে নিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আবেগে চোখে জল চলে এল কোহলির। যেন বুঝিয়ে দিলেন,'রাজা রাজাই থাকে।'
'ম্যাটার বড়া হে তো কিং খড়া হে।' টুইট করেছেন এক বিরাটভক্ত। যার কাছাকাছি বাংলা তর্জমা,'চ্যালেঞ্জ কঠিন হলেই রাজা এগিয়ে আসেন।'সত্যিই তিনি বিরাট-রাজা। রোহিত-রাহুল-সূর্যরা ফিরে যাওয়ার পর ভারতের অতিবড় সমর্থকও ভাবতে পারেননি এ ম্যাচ বেরোতে পারে! বিরাট জানালেন,'৩১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর হার্দিক বলেছিল, শেষ পর্যন্ত দেখব।' তার পর দু'জনের যুগলবন্দি। যে মহাকাব্যে 'রাম' বিরাট আর পাশে 'লক্ষ্মণ' হার্দিক।
বড় শট খেলা যাচ্ছিল না। সিঙ্গলস-ডাবলসেই ইনিংস সাজাচ্ছিলেন কোহলি-হার্দিক। ১১ ওভারে পর্যন্ত ৫৪ রান উঠেছিল। তার পর ৯ ওভারে দরকার আরও শ'খানেক রান। কোহলি তখন ২৬ বলে করেছেন ২২। যা একেবারে টি-২০ ঘরানার বিরোধী। শেষ ২৪ বলে দরকার ৫৪ রান। সেখান গিয়ার বদল করলেন কিং। একেবারে নিঁখুত অঙ্ক। যে অঙ্কের মাস্টার ছিলেন তাঁর প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অর্ধ শতরান করলেন। কিন্তু নো সেলিব্রেশন। গত মাসে কেটেছে শতরানের খরা। ৩ বছর পর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে দু'হাত তুলে সেলিব্রেট করেছিলেন। রবিবার মেলবোর্নে পাক গোলাগুলি সামলে তাঁর ব্যাটে এল অর্ধ শতরান। সেলিব্রেট করলেন না কোহলি। আসলে ব্যক্তিগত জয়-পরাজয়ে নিয়ে তিনি ভাবিত নন। আর তিনি কিং। কিং কোহলি।
ম্যাচ জিততেই স্ব-মেজাজে বিরাট। আবেগের বিস্ফোরণ। কোহলিসুলভ দাদাগিরি। মাঠময় তখন শুধুই বিরাট। মেলবোর্নের হাজার হাজার ওয়াটের ফ্ল্যাড লাইটে বাকিরা অন্ধকারে। অধিনায়ক এসে কোলে তুলে নিলেন নায়ককে। সতীর্থরা পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন। তার ফাঁকে তাঁর ট্রেডমার্ক স্টাইল। হাত ছড়ালেন কিং। উদ্বেল গ্যালারি। মাঠে উঠল, কোহলি কোহলি কলরব। ২০১৬ সালের মোহালির থেকে এ ইনিংসে এগিয়ে রাখছেন বিরাট। আর অধিনায়ক বলছেন,'টুপি খুলে কুর্নিশ'।
আরও পড়ুন- পাকিস্তান বধে কোহলির 'বিরাট' ইনিংস, আবেগের ম্যাচে ৫ টি বিশেষ মুহূর্ত