১৩৪ রান তুলে ভাল ওপেনিং স্ট্যান্ডেও বিশেষ লাভ হল না। অজিদের বোলিংয়ের সামনে একের পর এক উইকেট হারাতে শুরু করল পাকিস্তান। ৪৫.২ ওভারে, ৩০৫ রানে গুটিয়ে গেল পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। শাহীন আফ্রিদি শেষ অবধি লড়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারলেন না। মহাষষ্ঠীর রাতে, অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্সের হাতেই 'বধ' হলেন তিনি। ২/৬২-তে বেরিয়ে গেলেন। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬২ রানে হেরেছে পাকিস্তান।
তার আগে, মিচেল স্টার্কের হাতে আউট হন হাসান আলি। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত যে ক'টি বিশ্বকাপে খেলেছেন, তাতে অন্তত একটি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে মিচেল স্টার্কের। এদিনও সেই রেকর্ড বজায় রেখেছেন।
২৫৯ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ। তা সত্ত্বেও, শুরু থেকে যেন অস্ট্রেলিয়া সেটিকে ভালভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। শাহিন আফ্রিদি এবং হারিস রউফের গতির সামনে তাদের বাকি ব্যাটিং অর্ডার দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত ভালই টার্গেট তুলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ৫০ ওভারে ৩৬৭/৯ রান করে অজিরা। তবে এর আগে পাকিস্তান লম্বা রান চেজ করার ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। তাই অস্ট্রেলিয়া যে খুব নিশ্চিন্ত ছিল, তা বলা যায় না।
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাবর আজম। আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩-এর পয়েন্ট টেবিলে স্থান নিশ্চিত করতে এদিন দুই দলেরই মরিয়া লড়াই ছিল।
ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান প্রথম ১০ ওভারে সমস্ত উইকেটই অক্ষত রেছেছিল। ১০ ওভারে ৫৯ রানও তুলে নেয়। কিন্তু সেই সময়েই তারা যা রান রেট দরকার, তার থেকে প্রায় ৭ রানেরও বেশি পিছিয়ে পড়েছে। অ্যাডাম জাম্পার আক্রমণের সামনে যেন কিছুটা মিইয়ে যেতে শুরু করে পাকিস্তান।
অ্যাডাম জাম্পা অজিদের সমস্ত প্রত্যাশা পূরণ করেন। পিচ এমনিতেও এদিন বেশ স্পিনার-বান্ধব ছিল। বল করতে নেমে এক ওভারে থেকে মাত্র ১ রান দিলেন তিনি। ১১ তম ওভারে এমন ১ রান হলে তা যে ব্যাটিং অর্ডারের মনোবল কিছুটা নাড়িয়ে দেয়, তা বলাই যায়।
৫৩ রানে চার উইকেট তুলে নেন জাম্পা। তাঁকে 'আন্ডারেস্টিমেট' করলেই যে ব্যাটসম্যান বিপদে পড়বেন, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন তিনি। নওয়াজের একটি ছক্কা হাঁকানোর ঠিক পর পরই তাঁকে ফেরত পাঠালেন। আত্মবিশ্বাসী নওয়াজ দ্বিতীয়বার ছয় মারার লক্ষ্যেই বড়সড় চার্জ করেছিলেন। ব্যস, উইকেট-রক্ষক সেই সুযোগ ছাড়েনি। স্টাম্পের পিছন থেকেই উড়ে যায় বেল। নওয়াজ ঘুরে দাঁড়ানোর সময়টুকুও পাননি।
অস্ট্রেিয়ার দুরন্ত শুরু
অস্ট্রেলিয়া যখন তাদের প্রথম উইকেট হারাল তখন তাদের রান ২৫৯। দারুণ জুটি ওয়ার্নার ও মার্শের। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যা ষষ্ঠ সর্বোচ্চ। ওপেনিং জুটিতে দ্বিতীয়। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১২৪ বলে ১৬৩ রান করে আউট হন ওয়ার্নার। তাঁর ইনিংসে ছিল ১৪টা চার ও ৯টা ছক্কা। মার্শ করেন ১০৮ বলে ১২১ রান। ১০টা চার ও ৯টা ছক্কা মারেন তিনিও। এরপর যদিও উইকেট হারাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। যদিও যে শক্ত ভিতের উপর ওপেনাররা অস্ট্রেলিয়াকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে বড় রান হতোই। মার্শ আউট হওয়ার পরের বলেই আউট হন ম্যাক্সওয়েলও। রানের গতি ঠিক রাখতে নেমেই চালাতে শুরু করলে ক্যাচ আউট হন তিনি। স্টিভ স্মিথ উসমা মিরের বলে তাঁর হাতে ক্যাচ দিয়েই আউট হন মাত্র ৭ রান করে।
রান করতে পারেননি জস ইংলিশও। ৯ বলে ১৩ রান করে আউট হন তিনি। স্কুপ করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে তা সোজা রিজওয়ানের হাতে জমা প্রে। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেয় পাকিস্তান। সেখানে দেখা যায় বল গ্লাভসে লেগেছে। ২৪ বলে ২১ রান করে আউট হন মার্কস স্টোয়নিশও। রিভিউ নিলেও সিদ্ধান্ত বদলায়নি।
শাহিনরা। একের পর এক উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি বেশ ভাল ডেথ বোলিং করতে দেখা যায় হ্যারিস রাউফদের।
৯ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শাহিন। হাসান আলি আট ওভার বল করে ৫৭ রান দিলেও কোনও উইকেট পাননি। ৮ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়েছেন ইফতিকার। যদিও উইকেট পাননি। ৮ ওভারে ৮৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন হ্যারিস। ৯ ওভারে ৮২ রানে ১ উইকেট উসমা মিরের।