সিবিআই হানার সময় দু'টি মোবাইল পুকুরে ফেলে দিয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। সেই জোড়া ফোন উদ্ধারে পাম্প থেকে জেসিবি মেশিন পর্যন্ত কাজে লাগায় সিবিআই। রবিবার সকালে একটি ফোন উদ্ধার হয়। সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ আর একটি ফোনের খোঁজও মেলে। ৬৬ ঘণ্টা পর অভিযান সফল! কিন্তু লাখ টাকার প্রশ্ন, দুটি মোবাইল এতক্ষণ জলে থাকার পরও কি তথ্য অক্ষত থাকবে? কীভাবেই বা সম্ভব তথ্য-উদ্ধার?
সাধারণ মানুষের ফোনও অনেক সময় জলে বিকল হয়ে যায়। অথচ অনেক দরকারি তথ্য থাকে ফোনে। যা উদ্ধার করা দরকার। অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। কিনে নেন নতুন ফোন। কিন্তু ফোনের দরকারি তথ্য আর পাওয়া যায় না। তাহলে কীভাবে তথ্য উদ্ধার সম্ভব? টেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফোনের হার্ডওয়্যার ঠিক থাকলে জলে পড়লেও তথ্য উদ্ধার সম্ভব। ফোনের হার্ডওয়্যারে যে অংশটি গুরুত্বপূর্ণ তা হল এমবেডেড মাল্টিমিডিয়া কার্ড (embedded MultiMediaCard)। যাকে সহজ ভাষায় বলে ROM বা ইন্টারনাল মেমরি। এমবেডেড মাল্টিমিডিয়া কার্ডই হল স্মার্টফোনের প্রাণভোমরা। এটা পেয়ে গেলেই কেল্লাফতে! কিন্তু জীবনকৃষ্ণের ফোন আইফোন হলে ক্লাউড অ্যাকসেস থেকে তথ্য পেতে পারেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু জীবনকৃষ্ণ পাসওয়ার্ড না দিলে বিস্তর ঝক্কি পোয়াতে হবে।
টেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল জলে পড়ার পর ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলো নষ্ট হয়ে যায়। সেই সঙ্গে স্ক্রিন ও অন্যান্য জিনিস তো আছেই। তবে আস্ত থেকে যেতে পারে ইন্টারনাল মেমরি। যদি না সার্কিট পুড়ে সেটির ক্ষতি হয়, যে সম্ভাবনাও প্রবল। এমবেডেড মাল্টিমিডিয়া কার্ডের ক্ষতি হলেও কোনও সমস্যা হয় না। সেটি ওই একই মডেলের ফোনে লাগালেই যাবতীয় তথ্য চলে আসবে হাতের মুঠোয়। সেজন্যই মরিয়া হয়ে ফোনের খোঁজ করছিল সিবিআই।
আরও পড়ুন- অবশেষে উদ্ধার জীবনের দ্বিতীয় মোবাইলও; জালে বোয়াল, শোলও
মানুষের কিডনি অন্য মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা যায়। তেমনই এমবেডেড মাল্টিমিডিয়া কার্ডও একই মডেলের ফোনে প্রতিস্থাপন করলে তথ্য মিলবে। সাধারণ মানুষের ফোন কোনও কারণে নষ্ট হলে এই প্রক্রিয়ায় খরচ বেশি। সাধারণ মানুষকে ওই ফোনটিই সারাতে হবে। সেক্ষেত্রে সার্কিট ও মাদার বোর্ডের বদল করতে হবে। সেই সঙ্গে দরকারে স্ক্রিনও বদল করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে তথ্য উদ্ধারে খরচ অনেকটাই পড়বে। ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি জোগাড় হবে! সেজন্য অনেকেই আর মোবাইল সারান না। বরং নতুন একটি মোবাইল কিনে ফেলেন। যা যুক্তির দিক থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে একান্ত দরকার হলে এমবেডেড মাল্টিমিডিয়া কার্ড থেকে জরুরি তথ্য উদ্ধার করতেই পারেন। কোনও সমস্যা হবে না। আর আইফোনের ক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য ক্লাউডে থাকে। সেক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হবে না।