ইলেকট্রনিক তৈরির বাজারে চিনের দাদাগিরি শেষ। দ্রুত বিশ্বের উৎপাদন হাব তৈরির লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ভারত। মেড ইন ইন্ডিয়া আইফোন থেকে মেড ইন ইন্ডিয়া ল্যাপটপ, গত ১০ বছরে ছবি অনেকটাই বদলেছে। তবে এই ইলেকট্রনিক পণ্যের কেন্দ্র হওয়ার দৌড়ে তুরুপের তাস একটাই- সেমিকন্ডাক্টর চিপ। কোভিডের সময় থেকে বিশ্বজুড়ে সেমিকন্ডাক্টরের চাহিদা বেড়েছে। জোগান তুলনায় কম। আর সেই সুযোগকে হাতছাড়া করতে নারাজ কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই গুজরাটে মাইক্রন টেকনোলজি কাজ শুরু করে দিয়েছে। ভূমিপুজো হয়ে গিয়েছে। কারখানা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে টাটা প্রোজেক্টস।
দেশে চিপ উৎপাদনকারী প্রথম কোম্পানি
মাইক্রোন টেকনোলজিই এদেশে চিপ উৎপাদনকারী প্রথম কোম্পানি হতে চলেছে। শনিবার, তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, রাজীব চন্দ্রশেখর এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের উপস্থিতিতে গুজরাটের সানন্দে সেমিকন্ডাক্টর টেস্টিং এবং অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্টের ভূমিপুজো সম্পন্ন হয়। ইতিমধ্যে নিয়োগও শুরু হয়ে গিয়েছে।
জুন মাসেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল
জুন মাসে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের তিন মাস পর এই প্ল্যান্টের কাজ শুরু হয়। চলতি বছর জুনে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন মুলুক সফরের সময় মাইক্রোনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময়েই সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মাইক্রোনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তারপর মাত্র তিন মাস গিয়েছে। তার মধ্যেই মাইক্রোন প্ল্যান্ট শুরু করতে প্রস্তুত। ২.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রকল্প এটি। ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশন (ISM)-এর অধীনে এই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, এটি ডবল ইঞ্জিন সরকারের দ্রুত কাজ করার ক্ষমতার সেরা উদাহরণ। চুক্তির কয়েক মাসের মধ্যেই কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেল। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই কারখানা থেকে চিপ তৈরি হয়ে বেরতে শুরু করে দেবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, আগামী কয়েক বছরে মাইক্রোনে ৫,০০০ জনের সরাসরি চাকরি হবে। ১৫,০০০ পরোক্ষ কর্মসংস্থানও হবে। ২ ধাপে এই কারখানা তৈরি করা হবে।
দেশেই ২ লক্ষ কোটি সেমিকন্ডাক্টর চিপসের চাহিদা
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, বর্তমানে দেশে ২ লক্ষ কোটি টাকার চিপের চাহিদা রয়েছে। দিন দিন সেটা বাড়ছে।
আগামী কয়েক বছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ লক্ষ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, আমরা যেভাবে কাজ করছি তাতে খুব শীঘ্রই ভারত শুধু চিপসের অভ্যন্তরীণ চাহিদাই মেটাবে না, রফতানিও করতে পারবে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সেমিকন্ডাক্টর মিশন চালু করেছিল কেন্দ্র। এর লক্ষ্য হল ভারতকে সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা।