প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ বাবা অমরনাথের দর্শন করতে যান। করোনা মহামারীর কারণে গত ২ বছর অমরনাথ যাত্রা নিষিদ্ধ ছিল। তবে এবছর আবার শুরু হচ্ছে। এই বছর অমরনাথ যাত্রা চলবে ৩০ জুন থেকে ১১ অগাস্ট পর্যন্ত। মোট ৪৩ দিন ধরে চলবে এই যাত্রা। গত ১১ এপ্রিল থেকে যাত্রার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অমরনাথ যাত্রা সবচেয়ে কঠিন ট্রেকগুলির মধ্যে একটি। তাই যদি কেউ এই বছর অমরনাথ যাত্রায় প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন, তাহলে কিছু নিয়ম মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক অমরনাথ যাত্রার সময় কী কী করা উচিত, আর কী কী নয়।
এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন
অমরনাথ যাত্রায় আগে শারীরিক সুস্থতার যত্ন নিন। ভ্রমণে যাওয়ার আগে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার হাঁটুন। যদি জগিং করতে পারেন তবে প্রতিদিন ৩০ মিনিট করুন। ভ্রমণে যাওয়ার এক মাস আগে এই সমস্ত কাজ শুরু করুন। প্রতিদিনের রুটিনে যোগব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন, বিশেষ করে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম। অমরনাথ যাত্রার পথ বেশ কঠিন। তাই ১৩ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের নেবেন না। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলা এবং ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের এই যাত্রায় যাওয়ার অনুমতি নেই।
বর্ষাকালে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। এই সময় সেখানকার আবহাওয়াও খুবই ঠান্ডা থাকে। তাই অবশ্যই গরম কাপড় এবং একটি ছাতা সঙ্গে রাখুন। এছাড়া টর্চ, ওয়াটারপ্রুফ ট্রেকিং জুতা, রেইনকোট সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।
অমরনাথ যাত্রার সময় সম্পূর্ণ পোশাক পরিধান করুন। যেমন সালোয়ার কামিজ, প্যান্ট শার্ট বা ট্র্যাক স্যুট। শাড়ি এড়িয়ে চলুন, নয়তো ট্রেকিং আরও কঠিন হয়ে উঠবে। এছাড়াও, ভ্রমণের সময় ভাল ট্রেকিং জুতা পরুন। বৃষ্টির সময় রাস্তা খুব পিচ্ছিল হয়ে যায়, ফলে ভুলেও স্লিপার পরবেন না।
সর্বদা সঙ্গে জলের বোতল রাখুন এবং নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন। এছাড়াও, সঙ্গে স্ন্যাকস বহন রাখুন। পাশাপাশি শুকনো ফল, গ্লুকোজ বিস্কুট, গুড়, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি রাখুন।
সময় সব সময় নিজের গ্রুপের সঙ্গে থাকুন।
যদিও অমরনাথ যাত্রার সময় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়, তবুও জরুরী পরিস্থিতির জন্য সঙ্গে একটি প্রাথমিক চিকিৎসার কিট রাখুন।
এই কাজগুলি করবেন না
অমরনাথ যাত্রা একটি কঠিন যাত্রা। তাই বিভিন্ন স্থানে সতর্কবার্তা লেখা থাকে। ভ্রমণের সময় কতগুলি নিয়ম অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ও মেনে চলতে হবে।
গুহায় পৌঁছানোর জন্য কোনো শর্টকাট নেই। তাই যদি শর্টকাট নেওয়ার কথা ভাবেন, তবে তাতে বিপদে পড়তে পারেন।
ভ্রমণের সময় চারপাশ এবং পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন। প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করবেন না ও জায়গাটিকে নোংরা করবেন না।
অমরনাথ যাত্রাকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। তাই ওই সময় কোনও নেশাজাতীয় এবং আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ওই সময়ে মাংস এবং মদ ভুলেও খাবেন না।
এই টিপসগুলিও কাজে লাগবে
অমরনাথ যাত্রা রুটে চন্দনওয়াড়ি, শেশনাগ, পঞ্চতরণী ইত্যাদি জায়গায় সরকার ডিপো স্থাপন করেছে। সেইসব জায়গা থেকে ন্যায্যমূল্যে রেশন নেওয়া যায়। পথের ধারে অনেক লঙ্গর, চায়ের দোকান এবং ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট আছে। এছাড়া চন্দনওয়াড়ি, শেশনাগ এবং পঞ্চতরণীতে পোড়ানোর কাঠও পাবেন।
অমরনাথ যাত্রার জন্য, সরকারি বা বেসরকারি অপারেটরদের দ্বারা শিবির ইত্যাদি দেওয়া হয়। সেখানে সহজেই ঘুমানোর জন্য গদি, বালিশ এবং কম্বল পাবেন।
শ্রী অমরনাথজি শ্রাইন বোর্ডের তরফে অমরনাথ যাত্রার জন্য রেজিস্টার্ড যাত্রীরা ৩ লক্ষ টাকার বিমা পাওয়ার অধিকারী হবেন৷
আরও পড়ুন - গ্যাস-অম্বল কমাতে গাদা গাদা ওষুধ খাচ্ছেন? এই ঘরোয়া উপায়গুলো ট্রাই করুন