Train and Flight Ticket Cancellation Rules: প্রয়োজনে প্রত্যেককে ট্রেন এবং ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে হয়। প্রতিদিন কোটি কোটি ভারতীয় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য এগুলো ব্যবহার করেন। অতএব, আপনাদের সকলের জানা উচিত কিভাবে ট্রেন বা ফ্লাইটের টিকিট বুক করতে হয়। এছাড়াও টিকিট বাতিলের ক্ষেত্রে রেলওয়ে এবং এয়ারলাইন কোম্পানিগুলির কাছ থেকে আপনি কী ফেরত পান তা জানাও আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টিকিট রিফান্ড সংক্রান্ত অনেক শর্তাবলী রয়েছে। আসুন এক এক করে এই জেনে নেওয়া যাক।
ফ্লাইট বাতিল হলে কী হবে?
ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশনের (DGCA) মতে, যদি কোনও কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়, তবে এয়ারলাইনকে আপনাকে দুটি বিকল্প দিতে হবে। হয় তারা আপনার জন্য অন্য ফ্লাইটের ব্যবস্থা করবে অথবা আপনার পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে।
আপনি আপনার টিকিট বাতিল করলে কী হবে?
তবে আপনি নিজেই টিকিট ক্যানসেল করলে নিয়ম বদলে যায়। আপনি যদি ফ্লাইট ছাড়ার ৩ দিনের মধ্যে আপনার টিকিট বাতিল করেন তবে আপনাকে ৩৫০০ টাকা বা এয়ার ফেয়ার চার্জ দিতে হবে। আপনি যদি এই টিকিটটি ৩ দিনের আগে বাতিল করেন তবে ৩০০০ টাকা চার্জ কাটা হবে। তবে ৭ দিন আগে টিকিট বাতিল করা হলে পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এই সমস্ত শর্ত ডোমেস্টিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এয়ারলাইন ডাউনগ্রেড বা ক্যানসেল হলে কী হবে?
DGCA-র নিয়ম অনুসারে, যদি কোনও এয়ারলাইন কোনও যাত্রীর টিকিট ডাউনগ্রেড করে, তাকে না জানিয়ে এটি বাতিল করে বা বোর্ডিং অস্বীকার করে, তবে তাকে টিকিটের পরিমাণের ৩০ থেকে ৭৫ শতাংশ ফেরত দিতে হবে। ডোমেস্টিক ফ্লাইটে, টিকিট এবং ট্যাক্সের ৩০ শতাংশ ফেরত দিতে হবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীদের কিলোমিটারের উপর নির্ভর করে ৩০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত রিফান্ড এবং ট্যাক্স দিতে হবে।
রেলের চার্ট প্রস্তুত করার আগে নিয়ম
আপনি যদি রেলের চার্ট তৈরির ৪৮ ঘন্টা আগে টিকিট বাতিল করেন, তাহলে ফার্স্ট/এক্সিকিউটিভ ক্লাসের জন্য ২৪০ টাকা, এসি ২ টিয়ার/ফার্স্ট ক্লাসের জন্য ২০০ টাকা, এসি ৩ টিয়ার/এসি চেয়ার কার/এসি ৩ ইকোনমির জন্য ১৮০ টাকা রয়েছে বাতিল করার চার্জ। স্লিপারের জন্য ১২০ টাকা এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ৮০ টাকা ক্যানসেলেশন চার্জ ধার্য রয়েছে ৷ আপনি যদি যাত্রার ১২ ঘন্টা আগে টিকিট বাতিল করেন, তবে এমন পরিস্থিতিতে আপনার ক্যানসেলেশন চার্জ ভাড়ার ২৫ শতাংশ হয়ে যায়। ট্রেনের টিকিট যদি ১২ ঘণ্টার কম এবং ৪ ঘণ্টার আগে কোনো কারণে বাতিল করা হয়, তাহলে চার্জের ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে।
তৎকাল টিকিট সংক্রান্ত রেলের নিয়ম
আপনি যদি আপনার কনফার্ম তৎকাল টিকিট বাতিল করেন, আপনি টাকা ফেরত পাবেন না। যদি তৎকাল টিকিট ওয়েটিং লিস্টে থাকে তাহলে কিছু চার্জ কেটে নেওয়া হবে। চার্ট তৈরির পরে, যদি টিকিটটি RAC বা ওয়েটিং লিস্টে থাকে, তাহলে ট্রেন ছাড়ার সময়ের ৩০ মিনিট আগে আপনি যদি আপনার টিকিট বাতিল করেন, তাহলে স্লিপার ক্লাসে ৬০ টাকা এবং এসি-তে ৬৫ টাকা কাটা হবে। যদি টিকিট কনফার্ম হয় তাহলে আপনাকে ক্যানসেলেশন টাইমিং-এর বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ট্রেন ছাড়ার সময়ের ৪ ঘন্টা আগে টিকিট ক্যানসেল না করা হলে টাকা রিফান্ড দেওয়া হবে না।
ই-টিকিট এবং কাউন্টার টিকিটের জন্য রিফান্ডের নিয়ম
IRCTC অনুসারে, আপনি অনলাইনে বুক করা ই-টিকিট বাতিল করতে পারেন। এটি থেকে ক্যানসেলেশন চার্জ কেটে নেওয়ার পরে, রিফান্ড আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে৷ যদি আপনি PRS কাউন্টারে গিয়ে টিকিট বাতিল করেন, তাহলে সেখান থেকেই রিফার্ড দেওয়া হবে৷
পার্টি বা ফ্যামিলি টিকিট থাকলে কী হবে?
যদি আপনার কাছে ফ্যামিলি বা পার্টি ই-টিকিট থাকে এবং তাতে কিছু আসন কনফার্ম করা হয় এবং বাকিগুলো ওয়েটিং লিস্ট বা আরএসি হয়, এই পরিস্থিতিতে, আপনি যদি ভ্রমণ করতে না চান তবে আপনি কনফার্ম টিকিটেরও রিফান্ড পাবেন।
ট্রেন বাতিল হলে
ট্রেন বাতিল হলে, ই-টিকিট ভাড়ার পুরো পরিমাণ অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। আপনার যদি কাউন্টার টিকেট থাকে, তাহলে আপনি PRS কাউন্টার থেকে আপনার টাকা ফেরত পেতে পারেন। আপনাকে ট্রেনের নির্ধারিত প্রস্থানের ৭২ ঘন্টার মধ্যে যেকোনো কাউন্টার থেকে টিকিট বাতিল করতে হবে।
ট্রেন ডাইভার্ট হলে কী করবেন
যদি আপনার ট্রেনের রুট পরিবর্তন করে দেওয়া হয় এবং আপনি ভ্রমণ করতে না চান, তাহলে আপনি ভাড়ার পুরো টাকা ফেরত পেতে পারেন। এর জন্য, আপনাকে স্টেশনে যেতে হবে এবং ট্রেন ছাড়ার সময়ের ৭২২ ঘন্টার মধ্যে টিডিআর ফাইল করতে হবে।
ট্রেন ৩ ঘণ্টার বেশি দেরিতে চলছে
যদি ট্রেনটি আপনার বোর্ডিং স্টেশনে তার নির্ধারিত সময়ের থেকে ৩ ঘন্টা বা তার বেশি দেরিতে আসে, তাহলে আপনি আপনার ই-টিকেটের সম্পূর্ণ ফেরত পেতে পারেন। তবে সম্পূর্ণ ফেরত নিশ্চিত করতে ট্রেনের প্রকৃত ছাড়ার সময়ের আগে অনলাইনে টিডিআর ফাইল করা নিশ্চিত করুন। কাউন্টার টিকিটের ক্ষেত্রে যাত্রীরা যে স্টেশন থেকে আপনার যাত্রা শুরু হবে সেখানে টিকিটটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন এবং কাউন্টার থেকে পুরো টাকা ফেরত পেতে পারেন।
সিট না পাওয়ার ক্ষেত্রে
যদি আপনার কাছে একটি রিজার্ভেশন টিকিট থাকে এবং রেলওয়ে প্রশাসন আপনাকে একটি আসন/বার্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনি কোনো ক্যানসেলেশন/ক্লার্কেজ চার্জ কাটা ছাড়াই সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাওয়ার অধিকারী। টাকা ফেরত পেতে, আপনাকে ট্রেনের প্রকৃত ছাড়ার সময়ের ৩ ঘন্টার মধ্যে টিকিট জমা দিতে হবে।
অসংরক্ষিত টিকিটের জন্য নিয়ম
আপনার যদি একটি অসংরক্ষিত টিকিট থাকে এবং এটি বাতিল করতে চান, আপনি টিকিট ইস্যু হওয়ার ৩ ঘন্টার মধ্যে স্টেশন মাস্টারের কাছে টিকিটটি ফেরত করতে পারেন এবং প্রতি যাত্রী প্রতি ৩০ টাকা ক্লারিক্যাল চার্জ সাপেক্ষে ফেরত পেতে পারেন। যদি আপনার অসংরক্ষিত টিকিট অগ্রিম জারি করা হয়, তাহলে আপনি যাত্রার তারিখের ২৪ ঘন্টা আগে স্টেশন মাস্টারের কাছে তা জমা করে অর্থ ফেরত পেতে পারেন।
এসি ফেইল হলে কি হবে
আপনি যদি একটি এসি কোচে ভ্রমণ করেন এবং ভারতীয় রেলওয়ে আপনার যাত্রার একটি অংশের জন্য আপনাকে এসি সুবিধা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনি যাত্রার নির্দিষ্ট অংশের জন্য অর্থ ফেরত পাবেন।