scorecardresearch
 

Adivasi Hair Oil: Viral 'আদিবাসী হেয়ার অয়েল' মাখলেই ঘন-কালো চুল? ডাক্তাররা কী বলছেন জানুন

Know All About Adivasi Hair Oil: লম্বা, ঘন, কালো চুল সকলেই চান। বাজারে অনেক ধরণের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং চুলের তেল আছে। প্রায় সব প্রোডাক্টেই চুলের গ্রোথ বাড়ে বলে দাবি করা হয়। এমনই একটি হেয়ার অয়েল সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। তার নাম 'আদিবাসী হেয়ার অয়েল'।

Advertisement
বিজ্ঞাপনে এমন চুল দেখানো হয়। তেল মাখলেই আপনিও এমন চুল পাবেন? বিজ্ঞাপনে এমন চুল দেখানো হয়। তেল মাখলেই আপনিও এমন চুল পাবেন?
হাইলাইটস
  • বাজারে অনেক ধরণের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং চুলের তেল আছে।
  • প্রায় সব প্রোডাক্টেই চুলের গ্রোথ বাড়ে বলে দাবি করা হয়।
  • এমনই একটি হেয়ার অয়েল সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে।

Know All About Adivasi Hair Oil: লম্বা, ঘন, কালো চুল সকলেই চান। বাজারে অনেক ধরণের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং চুলের তেল আছে। প্রায় সব প্রোডাক্টেই চুলের গ্রোথ বাড়ে বলে দাবি করা হয়। এমনই একটি হেয়ার অয়েল সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। তার নাম 'আদিবাসী হেয়ার অয়েল'। এই বিশেষ তেলটি কর্ণাটকের আদিবাসী এলাকার। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ইদানিং হেয়ার অয়েল বেশ ভাইরাল।

অনেক সেলিব্রিটি-ইনফ্লুেন্সাররাও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আদিবাসী তেলের প্রচার করছেন।কমেডিয়ান ভারতী সিং, কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান এবং ইউটিউবার এলভিশ যাদবের মতো অনেকে এই আদিবাসী তেলের বিজ্ঞাপন করছেন।

এই তেল এতটাই জনপ্রিয় যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে মিম ছড়াতেও শুরু করেছে। আদিবাসী তেলের বিজ্ঞাপনে প্রায়শই দেখা যায়, মডেলদের লম্বা, ঘন এবং কুচকুচে কালো চুল রয়েছে। অনেকে এটাও দাবি করেন যে, এই তেলটি শুধুমাত্র চুলের বৃদ্ধির জন্যই নয়, বরং টাক আছে এমন ব্যক্তিদের চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

তেলটি আদৌ কাজ করে? এতে কী কী ওষুধ মেশানো রয়েছে, কে বানায় এবং কীভাবে তৈরি হয়? আসুন জেনে নেওয়া যাক...

আরও পড়ুন

এই তেল কোথায় তৈরি হয়?

পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের (কর্নাটক) বনাঞ্চলে হাক্কি পিক্কি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষরা থাকেন। একসময় এঁরা জঙ্গলে পশু-পাখি শিকার করতেন। এঁরা কর্ণাটকের এক তফসিলি উপজাতি এবং ঐতিহাসিকভাবে রানা প্রতাপ সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়।

বন্যপ্রাণী আইনের কারণে বর্তমানে শিকার নিষিদ্ধ। যুগ পাল্টেছে। বর্তমানে সেখানকার মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান থেকে অনেক কিছু তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মধ্যে একটি হল এই 'ট্রাইবাল হেয়ার অয়েল'।

Advertisement

আদিবাসী হেয়ার অয়েল মাখলে কী হয়? 

আদিবাসী হেয়ার অয়েলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটও রয়েছে। সেখানে এই তেলের বিশেষত্ব ও কিছু উপকারিতার উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে দাবি, 'আমাদের পূর্বপুরুষরা ৫ প্রজন্মেরও বেশি সময় ধরে বাড়িতে নিজেদের জন্য এই তেল তৈরি করছেন। এই তেলে প্যারাবেন, সিলিকন বা প্যারাফিন থাকে না। এই তেল খুশকি দূর করতে, চুল মজবুত করতে, টাক মাথায় চুল গজাতে এবং চুল পড়া রোধে সাহায্য করে।'

হঠাৎ এত ভাইরাল কেন?

সেলিব্রিটি এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা এই তেল প্রোমোট করছেন। তাই অনেকে কিনে দেখছেনও। 250, 500, 1000 ml-এর এই তেলের দাম যথাক্রমে 999, 1499 এবং 3000 টাকা। 

এই তেল এত জনপ্রিয় হল কীভাবে?


অনেকে বেঙ্গালুরুতে আদিবাসী হেয়ার অয়েলের কারখানা নিয়েও ভিডিও বানিয়েছিলেন।

তেলের বিজ্ঞাপনে লম্বা চুলের মহিলা-পুরুষদের দেখানো হয়। আবার কারও কারও লম্বা দাড়ির বহরও দেখানো হয় ছবিতে। 

তবে অনেকেই এই তেলের উপকারিতা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। অনেকে এটাকে স্ক্যামও বলছেন। এই কারণে এই তেল আরও ভাইরাল হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপনে অনেক পুরুষ মহিলাদের লম্বা এবং চকচকে চুল দেখানো হচ্ছে বটে। কিন্তু তার মানেই এমন নয় যে আপনারও তেল ব্যবহার করলেই এমন চুল হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উপজাতির মানুষরা ছোট থেকে গ্রাম্য এলাকায়, বনাঞ্চল ঘেঁষা স্থানে বড় হন। ফলে ভাল জলে স্নান ও পান করেন। দূষণ কম। তাছাড়া শহুরে মানুষের তুলনায় স্বাস্থ্যকর খাবার খান। গ্রাম্য পরিবেশে স্ট্রেস কম। এর পাশাপাশি তাঁদের কালো, লম্বা ও ঘন চুলের পিছনে জেনেটিক্সও একটা বড় কারণ। হতে পারে সেই কারণেই এমন চুল তাঁদের।

শুধুমাত্র তেল লাগিয়ে প্রাকৃতিকভাবে এমন চুল হচ্ছে ভাবলে ভুল করবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক আদিবাসী হেয়ার অয়েলের দাবি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন:

দ্য ইটারনাল ক্লিনিক, পাওয়াই, মুম্বইয়ের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডাঃ সায়্যাদ আজরা বলেন, 'টাক বা পুরুষদের চুলের টাক একটি প্যাটার্নে পড়ে। সবচেয়ে কমন হল কপালের সামনের অংশ থেকে চুল পড়া শুরু হওয়া। এগুলি প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন প্রভাব, চুলের গোড়া ফুলে যাওয়া, জেনেটিক্স, অনুপযুক্ত পুষ্টির মতো অনেক কারণেই হতে পারে। টাক পড়ার কারণটা আগে চিহ্নিত করুন। তারপরেই সেটির চিকিত্সা করুন। শুধুমাত্র চুলের তেল দিয়ে টাক পড়া আটকানো যায় না।'

আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, চুল পড়ার পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন, হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, পরিবেশ, বেশি রাসায়নিক যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ইত্যাদি।

গুরুগ্রামের সি কে বিড়লা হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রুবেন ভাসিন পাসি বলেন, 'খুশকির কারণে যদি আপনার চুল পড়ে, সেক্ষেত্রে আপনাকে খুশকিটা কমাতে হবে। এমন ক্ষেত্রে চুলের তেলে কোনও লাভ হবে না।'

ডাঃ পাসি বলেন, 'চুলে তেল লাগানোর মূল উদ্দেশ্য হল চুলকে মসৃণ করা। টাক পড়ার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং বেশি তেল লাগালে চুলে খুশকি বাড়তে পারে। কোম্পানি দাবি করছে, ভালো ফল পেতে দিনে দু'বার তেল লাগাতে হবে। এটা করলে খুশকির সমস্যা বাড়তে পারে।কারণ আর্দ্র পরিবেশে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া বেশি জন্মায়।'

Advertisement

চিকিৎসকরা বলছেন, এই তেলের উপাদানগুলির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। শুধুমাত্র সেলিব্রিটি এবং ইনফ্লুয়েন্সারদের পরামর্শে এটি ব্যবহার করাটা ঠিক নয়। তাই চুল পড়লে অন্ধের মতো কিছু না কিনে, আগে চর্মরোগ ও চুল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Advertisement