Tomb of Christ in Japan: ক্রুশবিদ্ধ হননি যিশু, ১০৬ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন জাপানের গ্রামে!

Tomb of Christ in Japan: খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাসকারদের একাংশের মতে, ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়নি যিশুর। ‘হোলি ব্লাড অ্যান্ড হোলি গ্রেল’ এবং ‘লাইফ অফ সেন্ট ইসা’ বইয়ে এর সমর্থনে বিস্তর দাবি ও উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। এই বইগুলির দাবিকে কিছুটা 'সত্য' প্রমাণ করছে জাপানের একটি ছোট্ট গ্রামে থাকা ‘যিশুর সমাধিস্থল’!

Advertisement
ক্রুশবিদ্ধ হননি যিশু, ১০৬ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন জাপানের গ্রামে!খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাসকারদের একাংশের মতে, ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়নি যিশুর।
হাইলাইটস
  • খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাসকারদের একাংশের মতে, ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়নি যিশুর।
  • ‘হোলি ব্লাড অ্যান্ড হোলি গ্রেল’ এবং ‘লাইফ অফ সেন্ট ইসা’ বইয়ে এর সমর্থনে বিস্তর দাবি ও উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।
  • এই বইগুলির দাবিকে কিছুটা 'সত্য' প্রমাণ করছে জাপানের একটি ছোট্ট গ্রামে থাকা ‘যিশুর সমাধিস্থল’!

Tomb of Christ in Japan: যিশু খ্রিস্টের প্রয়াণ নিয়ে ‘বাইবেল’-এ যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা মেনে নেন না অনেকেই। খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাসকারদের একাংশের মতে, ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়নি যিশুর। মাইকেল বেইগ্যান্ট, হেনরি লিঙ্কন এবং রিচার্ড লি তাঁদের ১৯৮২ সালে প্রকাশিত বই ‘হোলি ব্লাড অ্যান্ড হোলি গ্রেল’-এ (Holy Blood and Holy Grail) তুলে ধরেছিলেন এমন সব তথ্য, যা বিতর্কের ঝড় তোলে সারা বিশ্বে।

‘হোলি ব্লাড অ্যান্ড হোলি গ্রেল’ বইয়ের বিতর্কিত দাবি
মাইকেল বেইগ্যান্ট, হেনরি লিঙ্কন এবং রিচার্ড লি তাঁদের গবেষণার পর জানান, ক্রুশবিদ্ধ, গুরুতর আহত যিশুকে একটি গোপন গুহায় লুকিয়ে রাখা হয়। পরে সুস্থ হয়ে ওই গুহা থেকেই তিনি বেরিয়ে আসেন এবং ওই ঘটনাকেই বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে যিশুর ‘পুনরুত্থান’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

Holy Blood and Holy Grail

‘লাইফ অফ সেন্ট ইসা’ বই নিয়ে বিতর্ক
তাহলে সুস্থ হয়ে গুহা থেকে বেরিয়ে যিশু কোথায় গিয়েছিলেন? ১৮৯৪ সালে প্রকাশিত রুশ অভিযাত্রী নিকোলাস নোটোভিচের লেখা ‘লাইফ অফ সেন্ট ইসা’ (The Life of Saint Issa) নামের একটি বইতে দাবি করা হয়, তিব্বত ও বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে যিশুর যোগ ছিল। অদ্ভুতভাবেই যিশুর কিশোর বয়স থেকে যুবক হয়ে ওঠা পর্যন্ত কোনও ঘটনার উল্লেখ বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে বলা হয়নি। নোটোভিচ তাঁর বইয়ে দাবি করেন, ওই সময় রাজা হেরদের কোপ থেকে বাঁচাতে কিশোর যিশুকে হিমালয়ের কোলে এক বৌদ্ধ গুম্ফায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই গুম্ফাই বর্তমানে লাদাখের হেমিস মঠ। সুস্থ হয়ে গুহা থেকে বেরিয়ে (বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টের বর্ণনায় পুনরুত্থানের পর) যিশু সেখানেই ফিরে যান এবং সেখানেই বৃদ্ধ বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।

The Life of Saint Issa

যিশুর শেষ জীবন নিয়ে তাকেনোউচি মাতোরির কাহিনি
‘লাইফ অফ সেন্ট ইসা’ বই নিয়ে বিতর্ক আজও তাজা রয়েছে। কিন্তু এর পাশাপাশি এশিয়া মহাদেশের একটি গ্রামে থাকা সমাধি যিশুর মৃত্যু বা ‘অন্তর্ধান’ নিয়ে রহস্যকে আরও জটিল করে তুলেছে। জাপানের আওমোরির শিঙ্গো নামের এক গ্রামে নাকি যিশুর কবর রয়েছে! আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে জাপানে তাকেনোউচি মাতোরি নামে এক ব্যক্তি একটি ইতিবৃত্ত লিখে গিয়েছিলেন যেখানে যিশুর জীবনের ‘অজানা কাহিনি’র উল্লেখ ছিল। তাকেনোউচি মাতোরির কাহিনি অনুযায়ী, যাঁকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল তিনি যিশু নন, বরং তাঁর ছোট ভাই, যিনি যিশুকে বাঁচাতে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। যিশু তাঁর এই ভাইয়ের সাহায্যেই রোমান সৈন্যদের নজর এড়িয়ে জুডিয়া থেকে পালাতে পেরেছিলেন। জুডিয়া থেকে পালানোর সময় যিশুর সঙ্গে স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ছিল মা মেরির একগুচ্ছ চুল এবং তাঁর প্রয়াত ভাইয়ের কাটা একটি কান।

Advertisement

Tomb of Christ in Japan

জাপানের শিঙ্গো গ্রামে যিশুর সমাধিস্থল
তাকেনোউচি মাতোরির কাহিনি অনুযায়ী, জুডিয়া থেকে পালিয়ে যিশু নাকি জাপানে এসে পৌঁছান এবং শিঙ্গো গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। শিঙ্গো গ্রামে থাকাকালীন যিশু স্থানীয় এক যুবতীকে বিয়ে করেন এবং তাঁদের সন্তানও হয়েছিল। এই গ্রামেই ১০৬ বছর বয়স পর্যন্ত কাটিয়েছিলেন যিশু। তারপর বার্ধক্যজনিত কারণে যিশুর মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই গ্রামের কেউ কেউ এখনও যিশু খ্রিস্টের বংশধর। ১৯৩৬ সালে তাকেনোউচি মাতোরির লেখা সেই সব নথিপত্র আবিষ্কৃত হয়। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাকি সেগুলি সব ধ্বংস হয়ে যায়। সুতরাং, তাকেনোউচি মাতোরির লেখা কাহিনির সত্যাসত্য বিচারের কোনও উপায় এখন আর নেই।

Tomb of Christ in Japan

শিঙ্গো গ্রামের জেশাস মিউজ়িয়াম
তাকেনোউচি মাতোরির কাহিনির ভিত্তিতেই সেখানে গড়ে উঠেছে ‘জেশাস মিউজ়িয়াম’, যেখানে রাখা আছে যিশুর জাপানে বসবাসের প্রমাণ। এই মিউজ়িয়ামেই তাকেনোউচির লেখা কাহিনির একটি প্রতিলিপি রাখা রয়েছে। প্রতি বছর এখানে হাজার হাজার পর্যটক ভীড় করেন এই মিউজ়িয়াম দেখান জন্য। এখানে যিশুর সমাধির অদূরেই রাখা রয়েছে যিশুর ভাইয়ের কান এবং মাতা মেরির কেশগুচ্ছ (স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী)।

Tomb of Christ in Japan

তবে এ সবের পরেও তাকেনোউচির এই কাহিনি ‘কাল্পনিক’ বা ‘অসত্য’ বলেই মনে করেন অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ও পর্যটক। তবে মানুষ এই কাহিনিকে সত্যি বা কাল্পনিক— যাই মনে করুন না কেন, যিশুর সমাধি হিসাবে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে উত্তর জাপানের ছোট্ট গ্রাম শিঙ্গো। শিঙ্গো গ্রামের বাসিন্দাদের আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন আর এখানে পর্যটকদের একমাত্র আকর্ষণই হল যিশুর সমাধিস্থল।

POST A COMMENT
Advertisement