ডিসেম্বর পড়ে গিয়েছে। তারপরেও শীতের তেমন অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে না কলকাতায়। এক কথায় বলা চলে মহানগরি থেকে মুখ ফিরিয়েছে শীত। সকাল হলেই কুয়াশায় ঢাকছে আকাশ। বেলা বাড়লেই বাড়ছে তাপমাত্রা। আপাতত দক্ষিণবঙ্গে শীতের দেখা মিলবে না। এরকমই চলবে আবহাওয়া। জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় এদিন ভোরেও যথেষ্ট কুয়াশা ছিল। গতকাল বেলা বাড়তেই বেড়েছে গরম। কলকাতা-সহ রাজ্যের অনেকগুলি শহরেই সোমবার তাপমাত্রা ছিল রবিবারে থেকে বেশি। সোমবার শহরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুটোই ছিল স্বাভাবিকের ৩ ডিগ্রি বেশি।
প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড এবং সন্নিহিত এলাকার ওপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে বলে আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। সেই কারণেই আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস , যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এটাও স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ হবে ৯৮ শতাংশ।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিকিম ছাড়াও হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের দু-একটি জায়গা যেমন দার্জিলিং, কালিম্পং-এ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাকি জেলাগুলির আবহাওয়া শুকনো থাকবে বলে জানানো হয়েছে। । আগামী ২ দিন হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের কোনও কোনও জায়গায় কুয়াশা দেখা দিতে পারে। এছাড়া আগামী ৪ থেকে ৫ দিন রাতের তাপমাত্রা সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী ৪৮ গাঙ্গেয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলির আবহাওয়া শুকনো থাকবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় আগামী দুদিন কুয়াশা দেখা দিতে পারে। এছাড়া আগামী ৪-৫ দিন রাতের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না বলে জানানো হয়েছে।
নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকছে জম্মু-কাশ্মীরে। ঘূর্ণাবর্ত হয়েছে পূর্ব উত্তর প্রদেশ বিহার সংলগ্ন এলাকায়। এর প্রভাবে আগামী দু-তিন দিন উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং ওড়িশায় কুয়াশা সম্ভাবনা। এদিকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে মঙ্গলবার থেকে জম্মু-কাশ্মীর লাদাখ উত্তর-পশ্চিম ভারতের বেশকিছু রাজ্যে বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গে উত্তরে বাতাস ঢোকায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলীয় বাষ্প। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। সে করণে বাধা পাচ্ছে শীতল বাতাস। তাপমাত্রার এই বেড়ে যাওয়া এবং দখিনা হাওয়া বয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত উচ্চচাপ বলয়ের অবদান।যদিও আগামী ১১ থেকে ১৩ তারিখ কিছুটা পারদ পতনের সম্ভাবনা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। সেই সময় আর একটু ঠান্ডা পড়তে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢোকার কারণে কলকাতার আকাশ মেঘে ঢাকা।
সাধারণত কলকাতায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে শীত পড়ে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এখনও কিছুটা সময় রয়েছে। মেঘ সরলেই কনকনে ঠান্ডা মালুম হবে।