কলকাতা লাগোয়া নিউটাউনে বাংলাদেশের সাংসদ আনওয়ার-উল-আজিমকে খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। মুম্বই থেকে এক কসাইকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ধৃতের নাম জিহাদ হাওয়ালাদার। ধৃত কসাই বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। বেআইনি ভাবে মুম্বইয়ে থাকছিলেন বলে সিআইডি সূত্রে খবর।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই কসাইকে মুম্বই থেকে কলকাতায় এনেছিলেন মূল অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও আমেরিকায় থাকেন। কী কারণে খুন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিআইডি সূত্রে খবর, দেহ টুকরো করার জন্যই কসাইকে আনা হয়েছিল।
পুলিশের ধারণা, হানিট্র্যাপের শিকার হতে পারেন ওই সাংসদ। নিউটাউনের ফ্ল্যাটে এক মহিলার ফাঁদে পড়েছিলেন বলে অনুমান। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 'পূর্বপরিকল্পিত খুন' বলে প্রাথমিক ধারণা তদন্তকারীদের। খুনের জন্য সুপারিকে ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
এখনও সাংসদের দেহ উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মে নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন সাংসদ। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। সাংসদকে হত্যার পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে অন্য কোথাও ফেলে দেওয়া হয়। ৩টি ভিন্ন তারিখে ফ্ল্যাট থেকে দেহের টুকরোগুলো বার করা হয়। ১৪, ১৫ ও ১৮ মে খুনিরা দেহ নিয়ে যায়। নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে এবং পুলিশ সন্দেহ করছে যে দেহাংশগুলি ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতায় রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন ওই বাংলাদেশের সাংসদ। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেনওপার বাংলার শাসকদল আওয়ামি লিগের সাংসদ। নিউটাউন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বরানগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ওই সাংসদের শেষ লোকেশন নিউটাউনে দেখাচ্ছিল। বাংলাদেশ সরকারের তরফে বাংলার পুলিশকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের কাছে এক ব্যক্তি খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এখনও সাংসদের দেহ উদ্ধার করা হয়নি। তদন্ত চলছে। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে কলকাতায় আসেন ওই সাংসদ। ১৩ মে থেকে তিনি নিখোঁজ। বরানগরে এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন ওই সাংসদ। ১৩ মে কোনও একজনের সঙ্গে দেখা করতে বেরোন তিনি। তারপর থেকে আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই সাংসদের বন্ধু পুলিশে অভিযোগ জানান। সাংসদের ফোন থেকে পরিবারে মেসেজে জানানো হয় যে, তিনি নয়াদিল্লি গিয়েছেন। কিন্তু সাংসদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন সূত্রে খবর, পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।