জল্পনার অবসান। বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সল্টলেকে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন অভিজিৎ। বললেন, 'আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি। সম্ভবত ৭ মার্চ যোগ দেব।'
কেন বিজেপিতে যোগদান?
কেন বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, এই নিয়েও মুখ খুলেছেন অভিজিৎ। তাঁর সাফ কথা, 'বিজেপি সর্বভারতীয় দল। তৃণমূলের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছে। এখানে আর কোনও সর্বভারতীয় দল নেই।' গত ৭ দিনে বিজেপির সঙ্গে কথা হয়েছে বলে এদিন জানিয়েছেন অভিজিৎ।
কোন কেন্দ্রেে প্রার্থী?
লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হলে কোন আসনে লড়বেন? এই প্রশ্নের জবাবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, 'কোন আসনে লড়ব,তা বিজেপির উপর মহল সিদ্ধান্ত নেবে।ভোটে লড়ব কিনা দল ঠিক করবে।' পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্র থেকে পদ্ম প্রতীকে অভিজিৎ লড়তে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে।
সিপিএম-কংগ্রেসে কেন যোগ দিলেন না?
সিপিএম এবং কংগ্রেসে কেন যোগ দেবেন না, সেই কারণও ব্যাখ্যা দিয়েছেন অভিজিৎ। বলেছেন, 'সিপিএমে যোগ দেব না, কারণ আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী। ধর্মে বিশ্বাস করি। তাঁদের সঙ্গে আমার মিল হবে না। কংগ্রেস হল পারিবারিক জমিদারির একটা দল। এখানে জয়রাম রমেশের মতো শিক্ষিত মানুষেরা থাকেন। কিন্তু তাঁরা পদ পান না। রাহুল গান্ধীর মতো নেতাদের পিছনে থেকে যেতে হয়।'
মঙ্গলবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে ইস্তফা দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিভিন্ন মহলে জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। বিচারপতি হিসাবে পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজেই সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন অভিজিৎ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার কিছু সময় পর কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছন অভিজিৎ। তার পরেই রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগপত্র পাঠান বলে সূত্রের খবর। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন অভিজিৎ।
গত রবিবার প্রথম প্রকাশ্যে আসে অভিজিতের ইস্তফার খবর। সেদিনই তিনি ঘোষণা করেন যে, বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। রাজনীতিতে যোগ দেবেন বলেও জানান। তবে কোন দলে যোগ দেবেন তা স্পষ্ট করেননি। এর আগে, অভিজিৎ বলেছিলেন, 'গত কয়েক বছর ধরে, আমি এমন কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছিলাম যেখানে বিশাল দুর্নীতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আমি মনে করি একজন বিচারপতি হিসাবে আমার দায়িত্ব এখন শেষ। আমার বিবেকের আহ্বান যে এখন আমার জনগণের কাছে যাওয়া উচিত। আমাদের দেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর লোক আছে যারা আদালতে আসতে পারে না। তাঁদের সাহায্য করার জন্য শুধুমাত্র রাজনীতিবিদরা কিছু করতে পারেন। আমি তাঁদের জন্য কাজ করতে চাই। সেই মানুষগুলোর জন্য এখন কাজ করব।'
তৃণমূলকে নিশানা করে এদিন অভিজিৎ বলেছেন, 'তৃণমূল ভিতর ভিতর ভেঙে পড়ছে। এই দল বেশি দিন আর নেই। তৃণমূল একটা যাত্রাপার্টি।'