'তৃণমূল কংগ্রেসের রাশ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হাতে নেই, বরং দলের নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) হাতে।' নির্বাচনের আগে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের গলাতেই শোনা গিয়েছিল এই ধরনের কথা। এমনকী 'ভাইপো'কে জায়গা করে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অনেক বড়িষ্ঠ নেতাকেও যোগ্য সম্মান দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। আর শুধু তাই নয়, তৃণমূলে (TMC) যোগ্য সম্মান না পেয়ে আগামিদিনে আরও শীর্ষস্থানীয় নেতারা বিজেপিতে (BJP) আসতে পারেন বলেও দাবি ছিল কারও কারও। যদিও বাস্তবে অবশ্য তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। বরং নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পর, যাঁরা কিছুদিন আগে গেরুয়া শিবিরে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন।
এদিকে এরই মাঝে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জাতীয় স্তরে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেককে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেছেন মমতা। আর মমতার এই সিদ্ধান্তের পরে ফের একবার বিরোধীদের কারও কারও মুখে শোনা যায় 'পরিবারতন্ত্রের' অভিযোগ। এক্ষেত্রে দলের রাশ যে আগামিদিনে অভিষেকের হাতেই যাবে, এই সিদ্ধান্তের মধ্যে মমতা সেই বার্তা দিতে চেয়েছেন বলেই দাবি করতে থাকেন বিরোধীদের কেউ কেউ। তাঁরা ফের একবার দাবি করেন, অভিষেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে দলের অনেক যোগ্য ব্যক্তিকে জায়গা দিলেন না মমতা।
কিন্তু বিরোধীদের এই সব বক্তব্যের মাঝেই অন্য ভূমিকায় দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দায়িত্ব পাওয়ার পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ষীয়ান ৩ নেতার আশীর্বাদ নেন অভিষেক। এমনকী মঙ্গলবার দলের অপর এক শীর্ষ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের নয়া সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর শুধু বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাই করে তাঁদের আশীর্বাদ গ্রহণই নয়, এই সমস্ত নেতাদের সুচিন্তিত পরামর্শই যে আগামিদিনের লড়াইতে তাঁকে পথ দেখাবে, সোশ্যালসাইটে এমনটাও জানান অভিষেক।
অভিষেকের এহেন মনোভাবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, নতুন দায়িত্ব পেয়ে প্রথমেই দলের বড়দের মন জয়ের চেষ্টা করলেন তিনি। সেক্ষেত্রে বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও নেতার ক্ষোভ থেকেও থাকে, তাহলেও তা প্রথমেই মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করলেন অভিষেক। আর শুধু তাই নয়, বয়সে নবীন হলেও আগামিদিনে যে তিনি প্রবীণদের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই দল চালাবেন, এর মধ্যে দিয়ে অভিষেক সেই বার্তাও দিলেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে।