ট্রেন মেলেনি। বাসেই ৫ হাজার কর্মী নিয়ে দিল্লি রওনা দিল তৃণমূল। আর সেই যাত্রার আগেই ফের কেন্দ্রের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। 'দিল্লিতে আমাদের কারও গায়ে একটা আঁচড়ও লাগলে রেয়াত নয়,' বললেন তিনি। শনিবার ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে অভিষেক বলেন, '৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা গাজোয়ারি করে আটকে রেখেছে মোদী সরকার। এটি কেন্দ্রের স্বৈরাচারিতার অন্যতম উদাহরণ। এদিকে দরিদ্র মানুষের টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে ওখানে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন হচ্ছে, উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন হচ্ছে। গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে অন্যদিকে সেই টাকা খরচ করা হচ্ছে।'
দিল্লিতে ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রেনের আবেদন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে রেল। তবে তাতেও দমতে নারাজ তৃণমূল। দিল্লি যাওয়ার জন্য ৫০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই বাসেই দিল্লির পথে রওনা দিচ্ছেন তাঁরা। তৃণমূলের লক্ষ্য, ২ অক্টোবরের মধ্যে দিল্লিতে অন্তত ২-৩ হাজার মানুষের জমায়েত করা। অভিষেক বলেন, 'রামলীলা ময়দানে ধর্নার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ট্রেন চাওয়া হয়েছিল। সেটাও দেওয়া হয়নি। ট্রেন আটকে, ইডি পাঠিয়ে আমাদের রোখা যাবে না।'
আরও একবার বকেয়া পাওনার কথাও মনে করিয়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, 'আজকের দিনে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের পাওনা ১ লক্ষ কোটি টাকার উপরে। এই টাকা আমরা আদায় করে ছাড়ব। বিজেপির প্রত্যেক নেতাকে বলছি, এটা তৃণমূলের কর্মসূচি নয়। এটি মানুষের কর্মসূচি।'
বিজেপির নেতা-কর্মীদের অনেকে দাবি করছেন, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি হচ্ছে। তার পাল্টা এদিন অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, 'যদি ১০০ দিনের কাজের টাকায় দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু যদি ২জন মানুষ দুর্নীতি করে থাকেন, তার জন্য ২ কোটি মানুষের টাকা আটকে রাখা হবে কেন?'
কী কর্মসূচি?
অভিষেক জানিয়েছেন, আগামী ২ অক্টোবর TMC-এর সাংসদ, বিধায়ক এবং নেতারা দিল্লিতে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির পাদদেশে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর ৩ তারিখ যন্তরমন্তরে 'শান্তিপূর্ণ' প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও জমায়েত করা হবে।
দিল্লি যাওয়া কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়েও এদিন বার্তা দেন অভিষেক। তিনি বলেন, 'আমাদের নেতাদের গায়ে, সাংসদদের গায়ে হাত দিন। কিন্তু ওখানে যাওয়া একজনও সাধারণ কর্মীর গায়ে একটি আঁচড়ও যদি লাগে, সেটা ভাল হবে না। গণতান্ত্রিক পন্থাতেই আমরা তার জবাব দেব।'
অভিষেক বলেন, 'ইতিমধ্যেই বাংলা থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ চিঠি দিল্লির দরবারে পৌঁছেছে। এটি বাংলার দরিদ্র মানুষের আর্তনাদ। এটা কোনও সামান্য বিষয় নয়।'
অভিষেক বলেন, 'যতদিন বাংলার গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢুকবে, ততদিন এই লড়াই চলবে।' রাজ্যের জেলা, গ্রাম স্তরের কর্মী-নেতাদের জন্যও বার্তা দেন অভিষেক। তিনি বলেন, '২ অক্টোবর আপনারা একটি মোমবাতি জ্বালাবেন। শান্তিপূর্ণ মিছিল করবেন।'