তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মেলনীতে কাজল শেখের খোঁজ নিলেন অনুব্রত মণ্ডল। মঞ্চে দেখা যায়নি কাজলকে। তাঁর অনুপস্থিতির কারণে কেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত সবার কাছে জানতে চান, “কাজল শেখ এসেছে? আসতে পারেনি। সবাই মিলে আবার আসব। সব কষ্ট-দুঃখ-কষ্ট মিলিয়ে দল করব।” জানা গেছে, দলের বিভেদকে মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিচ্ছেন অনুব্রত।
তৃণমূল কংগ্রেস আগেই বিজয়া সম্মেলনের ডাক দিয়েছিল। প্রতিটি জেলার প্রতিটি পাড়ায় তৃণমূল নেতারা জনগণের সঙ্গে সংযোগ গড়ার জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। বীরভূমের সম্মেলনীতে অনুব্রত মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন, এবং সেখানেই এক অভাবনীয় বার্তা দিলেন দলের কর্মীদের। “আমি নেতা নই, আমি একজন সাধারণ কর্মী,”—এমন মন্তব্যে সকলকে চমকে দিলেন তিনি।
অনুব্রত মণ্ডল, যিনি তৃণমূলের একেবারে প্রথম সারির একজন নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এতদিন চড়াম-চড়াম ঢাক বাজানো ও তীব্র মন্তব্যের জন্য সুপরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে তাঁর "গুড়-বাতাসা" মন্তব্যগুলো তৃণমূলের রাজনৈতিক সভায় আলোচিত হয়েছিল। তবে, এদিন তাঁর সুর ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাঁর ভাষায় স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছিল যে তিনি নিজের ভূমিকা ও দলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন করে ভাবছেন।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনুব্রত বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের জন্য। উন্নয়ন চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। আমি আপনাদের মতোই একজন কর্মী। বুথ কর্মীরাই দলকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।” এই কথাগুলোতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি নিজেকে একজন নেতা হিসেবে আর দেখতে চাইছেন না। তিনি আরও যোগ করেন, “আমি নেতা নই। আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও হানাহানি করবেন না। মারামারি করবেন না। কাছে টেনে নিন। দল আরও বড় হবে।”
অনুব্রত আরও বলেন, কার জন্য ঝগড়া করবেন? আমার জন্য, মন্ত্রীর জন্য ঝগড়া করতে হবে না। আমরা সবাই কর্মী হয়ে যাই। নেতা হব না। আমাদের একজন নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন মঞ্চে তাঁর এই বক্তব্যকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, অনুব্রত মণ্ডল একটি নতুন ধারা তৈরি করতে চলেছেন, যা তৃণমূলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।