ঘুর্ণিঝড় দানার কারণে বৃষ্টির জেরে রাজ্যে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর চাই কৃষকদের জন্য বাংলা শস্য বিমাতে আবেদনের সময়সীমা আরও বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি। এর আগে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শস্য বিমায় আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েছিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন ৩১ নভেম্বর পর্যন্ত এই সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'দানার প্রভাবে চাষের জমি ক্ষতি হয়েছে। কষকদের ক্ষতি নিয়ে সার্ভে করা হবে। ৩১ নভেম্বর পর্যন্ত শস্য বিমা যোজনায় আবেদন করা যাবে।'
ঘুর্ণিঝড় দানার প্রভাব নিয়ে আজ নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি প্রশাসনের আধিকারিকদের চাষে ক্ষতি নিয়ে ফিল্ড সার্ভে করার নির্দেশ দেন। এছাড়াও শস্য বিমাতে আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'যেখানে চাষের জমি ক্ষতি হয়েছে সেখানকার কৃষকরা শস্য বিমার সুবিধা পাবেন। ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে ফিল্ড সার্ভে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে হবে। কৃষি দফতরের প্রধান সচিবকে এই কাজটা গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলছি। এর আগে বন্যা হয়েছে, মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। কেউ যেন সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়। চাষিরা যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা দেখতে হবে আমাদের।'
খরা, বন্যা, আবহাওয়ার বিভিন্ন সমস্যার কারণে কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকদের এই ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি প্রকল্প হল বাংলার শস্য বীমা প্রকল্প। শস্য বীমা প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার সঠিক মূল্য দেওয়া। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করে তবে চাষিদের টাকা দেওয়া হয়। বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ওই টাকা পাঠানো হয়।
এর আগে টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে রাজ্যে ধানচাষে ক্ষতি হয়েছে। বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার জেরে ধানচাষে ক্ষতি হয়েছে। কারণ এই জেলাগুলির বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যার জলের তলায় চলে গিয়েছিল ধান জমি। যার কারণে সেই এলাকাগুলিতে ধানচাষে ক্ষতি হয়েছে। প্রায় দু’লক্ষ হেক্টর জমিতে ধানচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছে রাজ্য সরকার। বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের সুবিধা প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শস্য বিমা প্রকল্পের সুবিধা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্য়ে নিশ্চিত করতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নাম নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনে সর্বাধিক সংখ্যক ক্যাম্প করার কথাও বলা হয়। এবার ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে শস্য বিমার সময়সীমা আরও ১ মাস বাড়ানো হল।