অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। হিংসার আগুনে জ্বলছে পড়শি দেশ। শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও শতাধিক মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই এরাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শরণার্থী সমস্যা। উত্তপ্ত বাংলাদেশে অশান্তি এড়াতেই বহু মানুষ ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসতে পারেন, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর কড়া সতর্কতা জারি করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সোমবার বিকেলে বিএসএফের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর। বিএসএফের ডিজি ইতিমধ্যেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন।
এমনিতেই শরণার্থী সমস্যা নিয়ে উদ্বেগে কেন্দ্র। এর উপরে বাংলাদেশের অশান্তির জেরে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। অনুপ্রবেশ যাতে না বাড়ে, তার জন্য ফুলবাড়ি সীমান্তে ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতীয় সেনা জওয়ান পাঠানো হয়েছে। আপাতত ফুলবাড়ি সীমান্তে আমদানি-রফতানি বন্ধ। বাকি সীমান্তগুলিতেও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শরণার্থী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পর উত্তাল হয়ে উঠেছিল জাতীয় রাজনীতি। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে সাহায্য চেয়ে কেউ দরজায় কড়া নাড়লে তাদের ফেরানো হবে না। তাঁর এই মন্তব্যের পরই শরণার্থী বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বাংলাদেশ সরকারের তরফেও সেই সময় বলা হয়, “মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হবে।”
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বিধানসভায় বলেন, 'এক কোটি শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গে আসবে। আপনারা তৈরি থাকুন। আমি তো তৈরি আছি। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে বলব, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলুন।'
অন্যদিকে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে বিতর্কের ঝড় প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও। বিজেপির অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের কারণে ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনায় জন মানচিত্রে পরিবর্তন ঘটছে। বাড়ছে হিংসা, সংঘাতের ঘটনা। লোকসভায় এই বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি বলেছিলেন, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বিহারের তিন জেলা-কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া ও কাটিহার-কে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি জানান। এই নিয়ে চরম রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই ফের একবার বাংলাদেশি শরণার্থী নিয়ে বাড়ছে চিন্তা।