শুক্রবার রাতে নিখোঁজ হওয়া ১১ বছর বয়সী এক কিশোরীকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে সূত্রে জানা যাচ্ছে। তবে খুনের কথা স্বীকার করলেও, ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছে সে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মোস্তাকিন সর্দার জানায়, সে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তার চেষ্টায় বাধা দিলে ওই নাবালিকাকে হত্যা করে। পুলিশ সূত্র ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছে, এরপর সে খুন করে দেহটি কাছের একটি খালে ফেলে দেয়। ঘটনায় ইতিমধ্যেই একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে।
অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছে যে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি মার্কেটের কাছে মেয়েটি টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার সময় তার মুখোমুখি হয়। তারপর সে একটি নির্জন কৃষি জমিতে ওই নাবালিকাকে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। নির্যাতিতা চেষ্টায় বাধা দিলে অভিযুক্ত তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার লাশ পাশের খালে ফেলে দেয়। তারপর বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্র জানায়, অপরাধ করার পর তার কোনও অনুশোচনার লক্ষণ দেখা যায়নি।
ওই রাতে মেয়েটির পরিবার তাকে নিখোঁজ বলে জানায়। নির্যাতিতার সহপাঠীদের সাক্ষাতকারে তাকে শনাক্ত করার কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। সে বেশ কয়েকদিন ধরেই এই নাবালিকার পেছনে ঘুরছিল বলেও সূত্রে জানা গেছে।
মৃতদেহটি উদ্ধারের পর জেলায় বিক্ষোভ দেখা দেয়, স্থানীয়রা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলে। মেয়েটির পরিবার দাবি করেছে যে তার লাশ পাওয়া যাওয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং পুলিশ তাদের অভিযোগের পেয়ে প্রথমে সাড়া দেয়নি। ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয় যখন কয়েকশ জনতা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশ কর্মীদের দিকে পাথর ছোঁড়ে। তারা ফাঁড়ির বাইরে পার্ক করা বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে।
মহিলা বিক্ষোভকারীরা লাঠি, ঝাড়ু এবং রান্নাঘরের বাসন নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। পুলিশ র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (RAF) সহ একটি বড় দল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ ব্যবহার করে। ঘটনাটি একটি রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে বিরোধী বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যর্থতার অভিযোগে নিন্দা জানিয়েছে৷