আধুনিক সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে মানুষ ভুলে গিয়েছেন সবুজায়নের কথা। যত্রতত্র আবাসন গড়ে তুলতে কেটে ফেলা হচ্ছে বনাঞ্চল। আর তার ফল হিসেবে বাতাসে কমে যাচ্ছে অক্সিজেনের মাত্রা, বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রভাব। এবার সেই কথা মাথায় রেখে এক অভিনব উদ্যোগ নিল বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়। তৈরি করা হচ্ছে ‘উদ্ভিদ ব্যাঙ্ক’। এই কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ লাগাতে মানুষকে উৎসাহিত করার জন্য চারাগাছ প্রদানের পাশাপাশি, যেসব চারাগাছ বিভিন্ন ভাবে নষ্ট হচ্ছে সেগুলিকেও সংরক্ষিত করা হবে। বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারন মানুষ।
এই প্রথম উদ্ভিদ ব্যাঙ্ক তৈরি হচ্ছে বীরভূম (Birbhum) জেলায়। চিপকো আন্দোলনের নেতা পরিবেশবিদ সুন্দরলাল বহুগুনার স্মৃতিতে ‘উদ্ভিদ ব্যাঙ্ক’ তৈরি করতে চলেছে বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়। সামনেই অরণ্য সপ্তাহ, তাই তার আগে এই ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। বর্ষার মরশুমে স্থানীয় গাছগুলির চারা তৈরিতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে জোর দেওয়া হয়েছে শাল, পলাশ, সেগুন, পিয়াল, মহুয়া, কৃষ্ণচূড়া, অমলতাস প্রভৃতি গাছের চারা তৈরিতে। এ এক অভিনব ভাবনা বলেই মনে করছেন অনেকে।
চারগাছ তৈরির পাশাপাশি কারও বাড়িতে ভাল গাছের চারা থাকলে সেগুলিও সংগ্রহ করা হবে নেই উদ্ভিদ ব্যাঙ্কে। এই উদ্ভিদ ব্যাঙ্কে যে কেউ গাছের চারা দিতে পারবেন। সেই চারাগাছগুলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় লাগান হবে৷ এমনকী উৎসাহী ব্যক্তিরা নিজের বাড়ির জন্য এই ব্যাঙ্ক থেকে গাছের চারাও সংগ্রহ করতে পারেন। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অমিয় প্রধান বলেন, "এটা অভিনব উদ্যোগ। পরিবেশের ভারসাম্য রাখতে সবুজায়ন করতেই হবে। তাই সাধারন মানুষের কাছে অনুরোধ যত পারবেন গাছ লাগান।"
বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয়কুমার সাধু বলেন, "আমাদের স্কুলে গাছের চারা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকের বাড়িতেই অযত্নে বহু গাছের চারা বেড়ে ওঠে৷ তাঁরা চারাগুলিকে উপড়ে ফেলেন বা ফেলে দেন৷ সেগুলো আমাদের ব্যাঙ্কে দিয়ে দিতে পারেন। যাঁরা গাছ নিতে উৎসাহী, তাঁদের আমরা এখান থেকে দিতে পারবো।"