scorecardresearch
 

Purohit Darpan: হাতে-কলমে পুজো শেখার সহজপাঠ, শতবর্ষেও অপরিহার্য নাস্তিক বুদ্ধদেবের দাদুর 'পুরোহিত দর্পণ' 

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট এবং নাস্তিক (communist) (atheist)। ঠাকুরদেবতায় বিশ্বাস করেন না। তবে হিন্দুত্ব (hindutva) নিয়ে বিজেপিকে (bjp) কটাক্ষ করতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (buddhadev bhattacharya) অতীতে বলতে শোনা যেত, 'হিন্দুত্ব বিজেপির থেকে শিখব না। আমার দাদু পুরোহিত দর্পণ (purohit darpan) লিখে গেছেন।' 

Advertisement
ফাইল ছবি। ফাইল ছবি।
হাইলাইটস
  • রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট এবং নাস্তিক (communist) (atheist)। ঠাকুরদেবতায় বিশ্বাস করেন না।
  • তবে হিন্দুত্ব (hindutva) নিয়ে বিজেপিকে (bjp) কটাক্ষ করতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (buddhadev bhattacharya) অতীতে বলতে শোনা যেত, 'হিন্দুত্ব বিজেপির থেকে শিখব না।

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট এবং নাস্তিক (communist) (atheist)। ঠাকুরদেবতায় বিশ্বাস করেন না। তবে হিন্দুত্ব (hindutva) নিয়ে বিজেপিকে (bjp) কটাক্ষ করতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (buddhadev bhattacharya) অতীতে বলতে শোনা যেত, 'হিন্দুত্ব বিজেপির থেকে শিখব না। আমার দাদু পুরোহিত দর্পণ (purohit darpan) লিখে গেছেন।' 

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাদুর নাম কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতিতীর্থ। হঠাৎ কেন তাঁর প্রসঙ্গ? এবছর শতবর্ষের দোরগোড়ায় তাঁর লেখা পুরোহিত দর্পণ। উল্লেখযোগ্যভাবে সামনেই দুর্গাপুজো। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে তাই অন্যতম আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে 'পুরোহিত দর্পণ'। একশো বছরের মুখেও চাহিদা তুঙ্গে এই অমূল্য বইয়ের। পুজো-পাঠ শেখার ক্ষেত্রেও অপরিসীম অবদান এই বইয়ের। 

পুরোহিত দর্পণ আসলে বাঙ্গালীর পুজা-পাঠের "হ্যাণ্ডবুক"। এবং  একটি আকর গ্রন্থ। এই নামের প্রায় ৩০-৪০টি বই বাজারে থাকলেও শতাব্দী প্রাচীন সুরেন্দ্রমোহন ভট্টাচার্যের পুরোহিত দর্পণই হল আদি বই। আজ থেকে ১২৭ বছর আগে ১২৯৮ বঙ্গাব্দে সুরেন্দ্রমোহনের বইটির প্রথম প্রকাশ। ১৩১১ সালে গ্রন্থটি পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করে পুনঃ প্রকাশিত হয়। বাঙ্গালির পুজা বিধির এই প্রাচীন গ্রন্থটি এখনও বইএর বাজারে সমাদৃত।বইটি Amazonএও পাওয়া যায়। 

আরও পড়ুন

কেন লিখেছিলেন এই বই? 
জানা যায়, পুজোর আচার-বিধি, নিয়মকানুন নিয়ে সে যুগে পুরোহিতদের মধ্যে বহু মত ছিল। কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতিতীর্থ তখনই মনস্থির করেন পুজোর সঠিক নিয়ম-আচরণ নিয়ে বই লিখবেন। প্রথমে হাত দিলেন দশবিধি সংস্কারের কাজে। লক্ষ্য করলেন পুজোর প্রত্যেক পদ্ধতি ক্রম ও মন্ত্রের মধ্যে কোনও মিল নেই। একাধিক বই ও শাস্ত্রের সাহায্যে তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলস্বরূপ প্রকাশ পেল আর্য্যাচারপদ্ধতি বা পুরোহিত দর্পণ। বইটি প্রথম ছাপা হয় 'সারস্বত লাইব্রেরি' থেকে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের পরিবারেরই প্রকাশনা সংস্থা ছিল এই 'সারস্বত লাইব্রেরি'। কিন্তু পরবর্তীকালে কৃষ্ণচন্দ্র এই বইয়ের স্বত্ত্ব তুলে দেন 'পিএম বাগচী এন্ড কোম্পানি' নামে প্রকাশনা সংস্থার হাতে। ১৯২২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত  পিএম বাগচী প্রকাশনালয়ের ছাদের নিচে প্রকাশ পায় কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতিতীর্থের 'পুরোহিত দর্পণ'।  

Advertisement

পারিবারিক 'সারস্বত লাইব্রেরি'তে এই বইয়ের যাত্রা শুরু হলেও সেই সময় কৃষ্ণচন্দ্র মনে করেছিলেন যে, কোনো বড় প্রকাশনা সংস্থার হাতে এই বইটা দিতে। যাতে আরও বেশি মানুষের কাছে এই বই পৌঁছে যায়। তাই বন্ধু কিশোরী মোহন বাগচীকেই দায়িত্ব দেন তিনি। সেই থেকেই পিএম বাগচী প্রকাশনার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠে কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতিতীর্থের 'পুরোহিত দর্পণ'। 
এর আগে এই বিষয় নিয়ে মাত্র একটি বই লেখা হয়েছিল। ১২৯৮ বঙ্গাব্দ অর্থাৎ ১৮৯১ সাল নাগাদ সৌরেন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য লিখে ফেলেন 'পুরোহিত দর্পণ'।

কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর পুরোহিত দর্পণ লেখার সময় যে সৌরেন্দ্রমোহনের সাহায্য নিয়েছিলেন সেই কথাও উল্লেখ করেছেন বইয়ের মুখবন্ধতে। একদিকে সুরেন্দ্রমোহনের, অন্যদিকে কৃষ্ণচন্দ্রের লেখা বইয়ের চাহিদা বেড়েই চলেছে। সুরেন্দ্রমোহনের বই অনেক দিন শতবর্ষ পার করেছে, কৃষ্ণচন্দ্রের বই শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। বহু পুরোহিত এই বইয়ের ওপর ভর করেই পুজোপাঠ চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এখন হাতে কলমে পুজো শিখছেন অনেকেই। পুজোর প্রতিটি সঠিক নিয়ম ও আচরণবিধি শেখানো হচ্ছে হাতে ধরে। গত তিন দশক ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরহিত্যের প্রশিক্ষণ চলছে। আর যেখানে এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চাহিদা, সেখানে প্রয়োজন বইয়ের। 
 

 

Advertisement