Sanjay Ray RG Kar-CBI: আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে ১১টি প্রমাণ তুলে ধরল CBI। সোমবার ধর্ষণ ও খুনের মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। ইন্ডিয়া টুডে-র হাতে সেই চার্জশিট এসে পৌঁছেছে।
চার্জশিট অনুযায়ী, মহিলা ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যায় সঞ্জয় রায়ের সরাসরি জড়িত থাকার ১১টি জোরালো প্রমাণ আছে সিবিআই-এর কাছে। শিয়ালদা আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে, CBI-এর দাবি, বেশ কিছু তথ্য, পরিস্থিতি, মৌখিক ও নথিবদ্ধ প্রমাণ এবং ফরেনসিক/বৈজ্ঞানিক রিপোর্ট রয়েছে। আর সেগুলি থেকেই প্রমাণ হয় যে, সঞ্জয় রায়ই আরজি কর-এর সেমিনার হলের ভিতরে এই অপরাধ করেছিলেন।
কী সেই ১১টি প্রমাণ?
১) ঘটনার সময় R.G Kar-এ সঞ্জয় রায়ের উপস্থিতির প্রমাণ আছে। জরুরী ভবনের থার্ড ফ্লোরে, যেখানে অপরাধ সঙ্ঘটিত হয়েছে, সেখানকার ৮ এবং ৯.০৮.২০২৪-এর মাঝরাতের সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেছে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি(সংক্ষেপে CFSL)।
২) R.G Kar-এ সঞ্জয় রায়ের উপস্থিতির দ্বিতীয় প্রমাণও রয়েছে। ০৮ এবং ০৯.০৮.২০২৪-এর মাঝরাতের সিডিআর (কল ডিটেইলস রেকর্ড) অনুযায়ী তার মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করেই সেই প্রমাণ মিলেছে।
৩) ময়নাতদন্তের সময় নির্যাতিতার দেহ থেকে প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তাতে সঞ্জয়ের DNA-র থাকার প্রমাণ মিলেছে।
৪) সঞ্জয় রায়ের জিন্স প্যান্ট এবং জুতোয় নির্যাতিতার রক্তের দাগ ছিল। কলকাতা পুলিশ ১২.০৮.২০২৪-এর রেকর্ডেই তার উল্লেখ করেছিল।
৫) অপরাধের ঘটনাস্থল থেকে ছোট চুল পাওয়া গিয়েছিল। CFSL-এ সেই চুলের ফরেন্সিক টেস্ট করে দেখা যায়, সেটা সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
৬) CFSL-এর রিপোর্ট অনুযায়ী অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের মোবাইল ফোনের সঙ্গে অপরাধ স্থল থেকে পাওয়া একটি ব্লুটুথ ইয়ারফোন কানেকটেড। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় ৮ এবং ০৯.০৮.২০২৪-এর মাঝের রাতে ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়ার সময় একটি ব্লুটুথ ইয়ারফোন নেকব্যান্ড পরে ঢুকেছিল।
কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে লিফটের দিকে ফেরার সময়, সেই ইয়ারফোনটি তার ঘাড়ে ছিল না।
৭) সঞ্জয় রায়ের মেডিকো লিগ্যাল টেস্ট করা হয়েছে। তার শরীরে পাওয়া আঘাতের চিহ্নগুলি পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, আঘাতগুলি যে সময় পরীক্ষা করা হচ্ছে (১০.০৮.২০২৪ তারিখ, দুপুর ১২:০০ টা) তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে যে কোনও সময়ের মধ্যে ঘটেছে। অর্থাৎ, আঘাত ০৮.০৮.২০২৪-এর দুপুর ১২টা থেকে ০৯.০৮.২০২৪-এর দুপুর ১২টার মধ্যে যে কোনও সময়ে লেগেছে। আর ঠিক এই টাইম ফ্রেমের মধ্যেই ভিকটিমকে ধর্ষণ এবং হত্যা করা হয়েছিল।
৮) অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের শরীরে পাওয়া আঘাতের ধরণও পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলি আক্রমণের সময় প্রতিরোধ/স্ট্রাগল করার সময় কেউ পাল্টা আঘাত করলে যেমনটা হওয়ার কথা, ঠিক তেমন ধরণেরই।
৯) অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের মেডিকো লিগ্যাল টেস্ট অনুসারে, তার যৌন অক্ষমতার কোনও লক্ষণ নেই।
১০) CFSL-এর রিপোর্ট অনুসারে, অপরাধের স্থল থেকে উদ্ধার হওয়া নির্যাতিতার বাদামী রঙের অন্তর্বাসের ইলাস্টিক জয়েন্টে, সেলাইয়ের সুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। কাপড় এবং ইলাস্টিকের মধ্যে সেলাইয়ের সুতো ছিঁড়ি যাওয়ার প্যাটার্নে বল প্রয়োগের ইঙ্গিত আছে।
১১) CFSL কলকাতার রিপোর্ট অনুসারে, নির্যাতিতার কুর্তির কোমরের অংশের দুই পাশ থেকে ছিঁড়ে গিয়েছিল। এটি হঠাৎ করে টানার কারণে হতে পারে।
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা CBI আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলার চার্জশিটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, তাদের তদন্তে, গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের জড়িত থাকার বিষয়টির BNS, 2023-এর 64, 66 এবং 103(1)।-এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।