বঙ্গ বিজেপির 'পারফরম্যান্স'-এ ক্ষোভপ্রকাশ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। বৃহস্পতিবার সল্টলেকের এক পাঁচতারা হোটলে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। অমিত শাহের দেওয়া ১ কোটির টার্গেট পূরণে ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি। এই নিয়ে কার্যত তুলোধনা করা হয়। বিজেপিতে আগে সক্রিয় সদস্যপদ ছিল ১০ লক্ষ। কিন্তু দেখা যায় সদস্যপদের অর্ধেকও নতুন করে পুর্নবীকরণ করেনি। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এদিন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আলাদা ঘরে বৈঠক করে দলের কেন্দ্রের নেতারা। তাহলে ২০২৬-এর বিধানসভার আগে আদি বিজেপিতেই তাদের ভরসা রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? প্রশ্নটা উঠছে।
বাংলায় বিজেপি প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে ও রাজ্যে বিরোধী দল, এই কথা স্মরণ করিয়ে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, "আপনারা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, সবাই দায়িত্ব পালন করেছেন?"
এহেন পরিস্থিতিতে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি নিয়োগ ঘিরে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। কারণ, প্রতিটি জেলায় সাংগঠনিক স্তরে একটি নির্বাচন হয়। এটাই দস্তুর। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে এই প্রথম ১০ লক্ষের মধ্যে ৫০ শতাংশ সদস্থপদ পুনর্নবীকরণ করতে পারেননি। এই বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়, দল যে দায়িত্ব দিয়েছিল তা সঠিকভাবে পালন করা হয়েছে কিনা। অমিত শাহের টার্গেট অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে অন্তত ২০০ সদস্যপদ লক্ষ্য পূরণ হয়নি। যার নির্যাস, বাংলায় বিজেপির ১ কোটি 'টার্গেট'-র মধ্যে মাত্র ২২ লক্ষ পূরণ হয়েছে।
এখানেই, আজ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে পৃথক বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০২১ সালে দিলীপ ঘোষের কাঁধে ভর করে যে সাফল্য এসেছিল, সেই সাফল্যের ফর্মুলাকেই কি কাজে লাগাতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? রাহুল সিনহা সহ বিজেপির পুরনো নেতারাও আজ বৈঠকে ছিলেন।
শীতকালীন অধিবেশনের কারণে সুকান্ত মজুমদার এদিন সাংগঠনিক বৈঠকে হাজির হননি। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জেলায় দলের একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে হাজির হননি। এদিন দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকলেও, তিনি বক্তার তালিকায় ছিলেন না। তাঁকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু বৈঠকের শেষে অন্য ঘরে আলাদা করে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পান্ডে ও অমিত মালব্য।
এই পরিস্থিতিতে আজ দু’দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার রাতেই শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামবেন। তবে এই সফরে কলকাতায় আসছেন না শাহ। মূলত উত্তরবঙ্গের সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেই তাঁর এই সফর। শুক্রবার বিকেলেই তিনি দিল্লি ফিরে যাবেন। শাহের সফরে কোনও বিজেপি-রাজ্যস্তরের কর্মসূচি বা মিটিং নেই। তবে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শিলিগুড়িতে উপস্থিত থাকবেন। ধারণা করা হচ্ছে, দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আড়ালে কিছু আলোচনা হতে পারে। যদিও বিজেপির নেতারা এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন।