টানা বৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা প্লাবিত। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই ঢুকল জল। বৃহস্পতিবার বিকেলে জলের স্রোত দেখা যায় মমতার বাড়িতে। গতকাল বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনের সময় মমতাকে ফোন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা। সেই ফোনে মমতাকে জল ঢোকার কথা জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'খবর পেলাম, আমি যেখানে থাকি, অত উঁচু করে বাঁধিয়েছি, তাও জল ঢুকল।'
জানা গিয়েছে, পূর্ণিমার ভরা কোটালে আদিগঙ্গার জল উপচে পড়ে বিপত্তি ঘটে। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল পাঁশকুড়ায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি।
অন্য দিকে, বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসির বিরুদ্ধেই ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 'ম্যান মেড বন্যা' বলে ফের অভিযোগ করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার মমতা হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন যে, ডিভিসির সঙ্গে সব সম্পর্ক তিনি ছিন্ন করবেন।
গতকাল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা। বলেন, 'ডিভিসি-র জলধারণ ক্ষমতা এখন মাত্র ৩৬ শতাংশ এসেছে। ডিভিসি-র জলে কেন বাংলা ডুববে? আমরা কৈফিয়ত চাই। ফরাক্কা ড্রেজিং করে না, বাংলা ডোবে, বিহার ডোবে। আর ডিভিসি ড্রেজিং করে না, বাংলা ডোবে। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচানোর জন্য জল ছাড়া হয়। ডিভিসি-র সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখব কিনা, ভেবে দেখব।' তারপরেই মমতা জানান যে, ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'ডিভিসি কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা। ৪ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। যা কোনও দিন হয়নি। আমরা ৫ লক্ষ পুকুর কেটেছি, কপালেশ্বর কেলেঘাট প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক এলাকাকে রক্ষা করেছি, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান, যেটা পড়ে রয়েছে ১০ বছর ধরে, সেটাও আমরা বিপিআর তৈরি করছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে করে দেব। কিন্তু তা সত্ত্বেও যদি এই রেটে জল ছাড়ে, তাহলে সমস্যা। আজ যে জায়গায় জল ঢুকেছে সেগুলি সকালেও শুকনো ছিল। এত বার বলার পরেও জল ছাড়া বন্ধ করছে না ডিভিসি।'
অন্য দিকে, প্লাবন পরিস্থিতির মধ্যেই ফের দুর্যোগের আশঙ্কা দক্ষিণবঙ্গে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তর-পশ্চিম এবং সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। যার প্রভাবে বৃষ্টি হবে দক্ষিণের জেলাগুলিতে।