সামনেই লোকসভা ভোট। তরা আগে একের পর এক জেলা সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ পশ্চিম মেদিনীপুরে জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর কলেজিয়েট মাঠের অনুষ্ঠানে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এখান থেকেই বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে যেমন তোপ দাগলেন মমতা ঠিক তেমনি কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলায় উন্নয়নের জোয়ার
পশ্চিম মেদিনীপুরের জনসভা থেকে মমতা বলেন, বাংলায় চাকরির অভাব হবে না। বাংলার সব জায়গায় শিল্পের হাওয়া বইছে। পাশাপাশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, দেব, জুনরা আমায় বারবার বলেছে। আমরা আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে অনেক কাজ করেছি। আগামী দু’তিন বছরের মধ্যে আমরাই করব ঘাটাল মাস্টার প্রকল্প। দিল্লির ভিক্ষা চাই না।
খড়গপুর নিয়ে হুঁশিয়ারি
খড়গপুরে ভোটের সময় মানুষকে ভয় দেখান হয় বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে বিজেপি শিবিরকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মমতা। তিনি বললেন, ‘‘একটা জলের লাইন কাটলে, একটা বিদ্যুতের লাইন কাটলে, একটা উচ্ছেদ হলে আমরা দেখিয়ে দেব। আমরা কেউ ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না। আমরা ঘাসটাকে রক্ষা করি।’’ পাশাপাশি মমতা বলেন, মেদিনীপুরের মাটি আনুগত্যের, গদ্দারদের নয়! মেদিনীপুর শহরের ঐতিহ্যের কথা বলেন মমতা। একে একে টেনে আনেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের কথাও।
ব্রিগেডের সভা নিয়ে মমতা
মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, আমরা ব্রিগেডে একটা সভা ডেকেছি। বাংলার গর্জন। বাংলাকে কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে? বাংলাকে কেন ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া হচ্ছে না? কেন টাকা দেওয়া হচ্ছে না? কেন বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। কেন আমাদের রেলের অনুমতি দেওয়া হয় না। এটা কি মগের মুলুক। আগামী দিনের শেষ কথা বাংলাই বলবে। আগামীর গর্জন বাংলাই করবে। চলুন সবাই ব্রিগেডে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এসে বলেছিলেন মোদীকে গ্যারান্টি মানে গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি। পাল্টা মমতা এদিন বললেন, ‘‘ মনে রাখবেন বাংলার সরকার গ্যারান্টি দিলে সেটা রক্ষা হয়! আর দিল্লি সরকার দিলে তা বর্জন হয়। দিল্লি সরকারের গ্যারান্টি কাজে লাগে না। ভোটের আগে গ্যাসবেলুন। ভোট চলে গেলেই গ্যাসবেলুন ফুটো হয়ে যায়।’’
সিপিএমকেও তোপ
বাম শিবিরকেও এদিন তোপ দেগেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একদিন জঙ্গলমহল, মেদিনীপুর, শালগড়, নেতাই, গড়বেতায় বেরতে ভয় পেত মানুষ। আমি তখন রেলমন্ত্রী ছিলাম। জলপাইগুড়িতে গেছিলাম অনুষ্ঠানে। খবর এল কেশপুরে ৭ জনকে সিপিএম খুন করেছে। আমি ফিরে এলাম সঙ্গে সঙ্গে। কারণ আমি শুনেছিলাম আমি না আসা পর্যন্ত তাদের কবর দেওয়া হবে না। আমি চম্পাই তলা চোখে দেখছি, হলদিয়ায় মিটিং করতে গিয়ে দেখি মাইক ম্যানকে অনুমতি দেয়নি সিপিএম। গড়বেতায় এক বিধবা মা আমায় বললেন ওনার দু’টো ছেলেকে সিপিএম মেরে দিয়েছে। তারাই এখন বিজেপি-র হার্মাদ। তারপর বললেন, মা গো আমার হাতে দু’টো জিনিস দেবে? আমি বললাম কী? উনি বললেন এক হাতে তৃণমূলের পতাকা দাও আর এক হাতে বন্দুক দাও। আমি আমার ছেলের খুনের বদলা নেব। মমতা বলেন, সিপিএম কী করেনি। সবাইকে ভয়ের মধ্যে রেখেছিল। কেউ কথা বলতে পারত না। আজকে সেই সিপিএমের হার্মাদরাই বিজেপির গদ্দার হয়েছে। এদের বিশ্বাস করবেন না।