সম্প্রতি স্পেন সফর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফরে কত কোটি টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব বাংলার মানুষকে দিতে হবে বলে দাবিও করেছিলেন বহরমপুরের সাংসদ। একইসঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে অধীর বলেছিলেন, "উনি কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্পেন সফর করতে পারেন কিন্তু এই বাংলার মানুষের পেইন (যন্ত্রণা) বোঝেন না।" এবার ডেঙ্গি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন বললেন। প্রদেশ সভাপতি বলেন, 'এই ডেঙ্গিতো ম্যানমেড ডেঙ্গি। আরো বলতে গেলে মমতা মেড ডেঙ্গি। আরো বলতে গেলে গভারমেন্ট স্পন্সর ডেঙ্গি।'
রাজ্যের ভয়াবহ ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, এ ডেঙ্গি হবে সবাই জানতো। ডাক্তার জানে, রোগী জানে, সাধারন মানুষ জানে। দিদিও জানে। বাংলার মানুষ ভগবানের ভরসায় বেঁচে আছে। ভগবানের ভরসায়, আল্লাহর ভরসায় দিন কাটছে । আমরা কিছু করতে পারবো না। সবাই জানে ডেঙ্গি হবে। অনেকবার বলা হয়েছে। অনেক আগে থেকে বলা হয়েছে। তাই বলবো এই ডেঙ্গি মমতা মেড ডেঙ্গি। সমস্ত দায়িত্ব এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিতে হবে।
অধীর চৌধুরী মমতা সরকারকে চোপ দাগতে গিয়ে বলেন, মৃত্যু হচ্ছে ডেঙ্গিতে, ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যু। মৃত্যুর কারণ বলা হচ্ছে না। মৃত্যুর কারণ সাধারণ দেখানো হচ্ছে। যাতে সরকারের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত না হয়। তারপরেই কংগ্রেস সাংসদের প্রশ্ন, এ বাংলায় কী চলছে? এ বাংলায় পৈশাচিক রাজ চলছে। হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগী সবাই আসতে পারে না। গ্রামে গঞ্জে হাসপাতালে কত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে ডেঙ্গির কারণে, তা আমরা জানতেও পারি না। ডেঙ্গুর যে লিস্ট দেখানো হচ্ছে তা অনেক অনেক বাড়বে। বড় ভয়ংকর অবস্থা। ডেঙ্গি আজ বাংলায় আরেক মহামারির নাম। জেনে, শুনে, বুঝে উদাসীনতার কারণে ডেঙ্গি আজ আমাদের জীবনে এক নতুন আতঙ্কের নামে রূপান্তরিত হয়েছে।
অধীর বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে পতনের হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। না মমতা, না ঈশ্বর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পেন সফর নিয়েও নিশানা করেছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। মমতা তার পরিবারের সঙ্গে তিন লাখ টাকার হোটেলে মজা করতে স্পেনে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অধীর বলেন, আজ পশ্চিমবঙ্গের পুরো শাসক দল দলগত লড়াইয়ে আছে। আগামী দিনে আরও বড় বিস্ফোরণ ঘটবে, অপেক্ষা করুন। মমতা বা ভগবান কেউই এই দলকে বাঁচাতে পারবে না। তৃণমূলের পতন নিশ্চিত। এমনকি ঈশ্বরও এই দলকে বাঁচাতে পারবেন না।
অধীর চৌধুরী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে রাস্তা নেই, ঘাট নেই, ডেঙ্গির চিকিৎসা নেই কিন্তু দিদির স্পেন যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। সেখানে বিলাসিতা আছে, তিন লাখ হোটেল ব্যবহার করেছেন, পুরো পরিবারকে নিয়ে গেছেন। স্বজনদের সঙ্গে স্পেনের তিন লাখ হোটেলে মজা করতে গিয়েছিলেন। ওখান থেকে কিছু নিয়ে আসেন। মানুষকে বোকা বানাচ্ছে যে এই নিয়ে এসেছে। লুলুকে এনে এখানে কিছু হবে না। তিনি একজন খুব বড় ব্যবসায়ী যিনি মল তৈরি করেন। তিনি কেরলের বাসিন্দা এবং আমরা তাকে খুব ভালো করে চিনি। সে এখানে কী করবে? সর্বাধিক, সে একটি মল তৈরি করবে। ওরা এখান ডাকলেই আসবে, আগেও বলেছিল, জায়গা দাও, আমরা এখানে আসব। কিন্তু তা থেকে কী হবে? একটি দোকান স্থাপন শিল্প নয়। কত লোক চাকরি পাবে?