সংসদে তাণ্ডবের ঘটনায় অভিযুক্তরা জঙ্গি নন বলে মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠকে লোকসভার কংগ্রেস নেতা বলেন, 'যাঁরা হামলা করেছিলেন, তাঁরা জঙ্গি নন। প্রতিবাদী। এখন আবার তাঁদের উপর ইউএপিএ (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন) ধারা যোগ করা হয়েছে। যদি জঙ্গি হত, তা হলে কী হত! জোর বেঁচে গিয়েছি। উপরওয়ালা বাঁচিয়ে দিয়েছে।'
বুধবার দুপুরে সংসদে অধিবেশন চলছিল। সেই সময় আচমকাই দর্শকদের গ্যালারি থেকে দু'জন ঝাঁপ দেন। এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান সাংসদেরা। ছিটকে সরে গিয়ে সাংসদেরা দেখেন যে, চারদিকে হলুদ রঙের গ্যাস বেরোচ্ছে। দুই যুবকের হাতে ছিল রং বোমা। এই দুই যুবকের নাম সাগর এবং মনোরঞ্জন। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, সংসদের বাইরে স্প্রে নিয়ে ঘুরছিল আরও দু'জন। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবহণ ভবনের সামনে থেকে এক মহিলা-সহ ২ জনকে পাকড়াও করা হয়েছে। তাঁদের নাম অমল এবং নীলম। এই চার জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই ধারা যোগ করা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন অধীর।
সংসদে তাণ্ডবের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতা নিয়ে সরব হয়েছেন অধীর। বলেছেন, 'দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এখনও কোনও জবাব দিলেন না কেন? এখনও কেন চুপ? উনি কি দেশের প্রধানমন্ত্রী? যিনি সংসদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না, তিনি দেশের নিরাপত্তা কী ভাবে দেবেন!' এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও আক্রমণ করেছেন অধীর। বলেছেন, 'কেন গোয়েন্দা তথ্য পেলেন না? অমিত শাহকে জবাব দিতে হবে। ওঁকে জেরা করা হোক।' অধীরের সংযোজন, ' মোদীর ফৌজ রুখতে পারেননি হামলা। সাংসদেরা রুখেছেন। মোদীর বর্ম নিশ্ছিদ্র নয়।'
সংসদে তাণ্ডব এবং নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় শনিবার আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। এই নিয়ে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হল। ধৃতের নাম মহেশ কুমাওয়াত। এর আগে,সংসদে হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ললিত মোহন ঝা নামে এক যুবককে। সংসদে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় ললিতই মূলচক্রী বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার রাতে কর্তব্যপথ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ললিত। তাঁকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সংসদে তাণ্ডব চালানোর ঘটনার ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করেছিলেন ললিত, এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। ললিতের কাছ থেকে কোনও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়নি। রাজস্থানে সব অভিযুক্তের মোবাইল ফোন ললিত এবং মহেশ নষ্ট করে দিয়েছেন বলে সন্দেহ পুলিশের।