ভারতে ফের জাঁকিয়ে বসছে করোনা-ভয়। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের অনেকগুলি রাজ্য নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পশ্চিমবঙ্গও কি সেই পথে হাঁটবে? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
ভারতের কয়েকটি শহরের করোনা-ছবি রীতিমতো উদ্বেগজনক। আর তা জাগিয়ে দিয়েছে নতুন প্রশ্ন। দেশে কি লকডাউন ঘোষণা করা হবে? পশ্চিমবঙ্গ কি তার আগে থেকেই লকডাউন ঘোষণা করবে?
ইতিমধ্যেই ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশে বাড়ছে সংক্রমণ। তাই তারা আর ঝুঁকি নিতে চায়নি। লকডাউন জারি করে দিয়েছে। সেই সহ দেশের মধ্য রয়েছে ব্রিটেন, জার্মানি, স্পেন, ইতালি।
এ দেশের কয়েকটি বড় বড় শহরও কড়া বিধি জারি করেছে। দিল্লি, মুম্বই, জয়পুর. আহমেদাবাদ, ইন্দৌরের মতো শহরগুলি তার মধ্যে রয়েছে। সেখানে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আর তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সেখানকার প্রশাসন। পরিস্থিতি সামলাতে সরাসরি লকডাউন না করলেও কড়া বিধি-নিষেধ চালু করেছে। যেমন দিল্লিতে মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। দিল্লিতে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, সামগ্রিক ভাবে সেখানে যদি লকডাউন না-ও হয়, কিছু বিধিনিষেধ তো থাকছেই।
গুরগাঁওতে কয়েকদিন আগে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছিল। আর তারপরেই খারাপ খবর আসতে শুরু করে। কয়েকদিন ক্লাস করতে না করতেই ১৭৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে করোনা সংক্রমণ হয়। বাদ যাননি শিক্ষকরাও। ১০৭ জন শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হন। তাই হরিয়ানা সরকার সব স্কুল ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে। আহমেদাবাদ রাত ন'টা থেকে সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করে দিয়েছে। চলবে পরদিন সকাল ছ'টা পর্যন্ত। মুম্বই পুরসভা তাদের অন্তর্গত এলাকায় সব স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই পথে হেঁটেছে থানেও।
২১ নভেম্বর থেকে ইন্দোর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাইট কারফিউ চালু করার। তবে জরুরি পরিষেবাকে পরিষেবা। ওর ওই রাজ্যের ভোপাল, গোয়ালিয়ার, বিদিশা, রতলমে শহরেও নাইট কারফিউ চালু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জানিয়েছেন, সেখানে গোটা রাজ্যে লকডাউন হবে না।
এ রাজ্যের করোনা সংক্রমণ চিত্র খুব একটা ভাল নয়। এটা সত্যি কথা, রোজ যতজন আক্রান্ত হচ্ছে, তার থেকে বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে না। বরং মাঝেমাঝে তা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। চিকিৎসকদের একাংশ। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটের মতো উৎসবে মানুষের ভিড় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। তবে এর জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল। রাজ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না অনেকেই। এটা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। রাস্তাঘাটে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হোক বা মাস্ক পরা হোক- তা নিয়ে প্রচার চালালেও সকলের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা যায়নি। আর তার ফলেই সংক্রমণ আটকানো যাচ্ছে না।