রাজ্যের অন্যতম পর্যটনস্থল দিঘা। সারাবছরই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান এই সৈকত শহরে। ছোট ছুটি বা উইকএন্ড প্ল্যান, সবচেয়ে প্রথমেই যে জায়গাগুলির নাম উঠে আসে, তারমধ্যে অন্যতম দিঘা। বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় বেড়ানোর জায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা। সামনেই দুর্গাপুজো। দুর্গা পুজো যত এগিয়ে আসছে দিঘার হোটেলগুলিতে বুকিং তত শেষের পথে। আর এই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের আনন্দ দিতে নিজের মতো করে সেজে উঠছে সমুদ্র সৈকত সুন্দরী দিঘা। আর এর মাঝেই পর্যটকদের জন্য় এল দারুণ খবর। এবার পুজোয় গোয়ার মতো দিঘার সমুদ্রেও নামতে চলেছে সুসজ্জিত প্রমোদতরী।
ভারতে যেসব সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা বছরের বিভিন্ন সময় ভিড় জমান তার মধ্যে সবচেয়ে বিলাসবহুল সমুদ্র সৈকত রয়েছে গোয়ায়। বহু মানুষের স্বপ্ন একবার গোয়ার সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে আসার। কিন্তু খরচ অনেক বেশি হওয়ার কারণে তা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে এবার পুজোয় গোয়ার স্বাদ দিঘা সমুদ্র সৈকতেই মিটতে পারে। গোয়ার ধাঁচে এবার দিঘার সমুদ্রে নামতে পারে ঝাঁ চকচকে প্রমোদতরী। সব ঠিক থাকলে রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে দিঘা চালু করা হতে পারে প্রমোদতরী বা ক্রুজ পরিষেবা।
সমুদ্রের তীর বরাবর চলেছে দিঘা থেকে শৌলা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৯ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ । মাঝখানে রয়েছে ঝাউবন। সব মিলিয়ে এক অপূর্ব এবং মনোরম পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভেসে চলবেন পর্যটকরা। আর পুজোর আগেই এই পরিষেবা শুরু হলে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে সেটাই হবে সমুদ্রবক্ষে প্রথম প্রমোদতরী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর মরশুমে সমুদ্রবক্ষে প্রমোদতরীতে ভ্রমণের স্বাদ উপভোগের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। এই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রমোদতরী প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজ চলছে।
এরআগে কলকাতায় গঙ্গাবক্ষে প্রমোদতরী নামতে দেখা গিয়েছে। রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে আগে সুন্দরবনে এই ধরনের ক্রুজ পরিষেবা চালু করা হয়েছিল এবার সমুদ্রবক্ষেও স্বাদ মিলবে এই প্রমোদতরীর। যা পুজোর আগে পর্যটকদের কাছে হয়ে উঠতে পারে একটি নতুন আকর্ষণ। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনে চালু হওয়া প্রমোদতরীর আদলে দিঘার ক্রুজটি তৈরি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, পিপিপি মডেলে দিঘার সমুদ্রে চলবে এই ক্রুজ পরিষেবা। ইতিমধ্যেই টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে। সূত্রের খবর, এই প্রমোদতরীর ধারণ ক্ষমতা ৮০ জন। বিশেষ বিশেষ দিনে সমুদ্রবক্ষে ঝাঁ চকচকে অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিশেষ পার্টিও আয়োজন করা যাবে। এতদিন পর্যটকরা সৈকত থেকেই সমুদ্রের রূপ উপভোগ করেছেন। এবার প্রমোদতরীতে চেপে সমুদ্রযাত্রার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে।
কী কী বিশেষত্ব এই প্রমোদতরীর?
আপাতত জানা গিয়েছে, এই প্রমোদতরীতে উঠতে পারবেন ৮০ জন। সমুদ্রবক্ষে ঝাঁ চকচকে অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিশেষ পার্টিও আয়োজন করা যাবে এই প্রমোদতরীতে। পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রমোদতরীতে চেপে সমুদ্রবক্ষে ঘোরার জন্য পর্যটকদের জন্য এক ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। ওল্ড দিঘার নয়াখালি মন্দির থেকে শুরু হয়ে ২৯ কিলোমিটার জুড়ে চলবে এই যাত্রা। ওল্ড দিঘা থেকে মেরিন ড্রাইভ, শঙ্করপুর, মন্দারমণির পাশাপাশি খাড়ি এলাকাগুলিতে ঘুরবে 'এমভি নিবেদিতা' নামের এই প্রমোদতরীতে। পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই জলযানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। জানা গিয়েছে দিঘার পর্যটকদের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রত্যেকদিন দুটি করে সফর নির্দিষ্ট করা হয়েছে। চাহিদা বাড়লে ট্রিপের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।