প্রতিবছরের মতো এবারও সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা নির্ধারনের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সুন্দরবন জুড়ে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে বন দফতর। শনিবার থেকে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উদ্যোগে এই কাজ শুরু হয়েছে।
শুরু ক্যামেরা বসানোর কাজ
সুন্দরবনে বাঘেদের সঠিক সংখ্যা জানতে প্রতিবছরই জঙ্গলের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসানো হয়। পরে সেই ছবি তুলে বিশ্লেষণ করে অনুমান করা হয় বর্তমানে ঠিক কত বাঘ আছে সুন্দরবনে। এবারও সেই কাজ শুরু হয়েছে। গত বছরের হিসেব অনুযায়ী সুন্দরবনের জঙ্গলে প্রায় শ’ খানেক বাঘ ছিল। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়েছে না কমেছে তা জানার চেষ্টা শুরু করলেন বন দফতরের আধিকারিকরা। দুই পর্যায়ে চলবে এই ক্যামেরা বসানোর কাজ। প্রথম ধাপে, ৫ই ডিসেম্বর থেকে ১১ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ই ডিসেম্বর থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ পরগনা বনবিভাগ এলাকায় ক্যামেরা বসানোর কাজ চলবে। প্রায় মাসখানেক থাকার পর জঙ্গল থেকে ক্যামেরা তুলে নেওয়া হবে। আর সেই ক্যামেরায় ওঠা বাঘেদের ছবি বিশ্লেষণ করে সংখ্যা নির্ধারণ হবে বাঘেদের।
আরও পড়ুন, হেঁটে ফেলেছে ৩০০০ কিলোমিটার, এখনও সঙ্গীনির খোঁজে এই 'বাঘমামা'
বনকর্মীদের বিশেষ দল
এবার ক্যামেরা বসানোর কাজে মোট ১০ টি দল অংশগ্রহণ করছে। প্রতিটি দলে ১২ জন করে বনকর্মী থাকছেন। মোট ১২০ জন বনকর্মী এই ক্যামেরা বসানোর কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। জঙ্গলের মোট ৫৮২ টি জায়গায় ১১৬৪টি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এছাড়া ড্রোন ক্যামেরা ও জিপিএস এবং ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিজস্ব পেজে সফটওয়ারও বাঘ গননার কাজে ব্যবহৃত হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা।
আগে অন্য পদ্ধতি ছিল
এর আগে এই পরীক্ষার পদ্ধতি অন্য রকম ছিল। আগে বাঘের পায়ের ছাপ, মল সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে জঙ্গলে বাঘেদের সংখ্যা ঠিক কত রয়েছে তা জানার চেষ্টা করতেন বনকর্মীরা। কিন্তু সেক্ষেত্রে যথেষ্ট ঝুঁকি থেকে যাওয়ায়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে এই কাজ করা হচ্ছে। নতুন এই পদ্ধতি যেমন একদিক থেকে কম ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি অনেকটা সঠিক তথ্য এই পদ্ধতিতে পাওয়া সম্ভব বলেই দাবি বন আধিকারিকদের।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস বলেন, “বিগত কয়েকবছর ধরে এই বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতেই বাঘের সংখ্যা নির্ধারণের কাজ চলছে। এবারও তা শুরু হয়েছে। মাসখানেক বাদে ক্যামেরাগুলি তুলে এনে সেগুলির ছবি বিচার বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। আমাদের আশা সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে।”