২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে নতুন করে নির্বাচন আর হয়নি। বিরোধীরা অনেক দিন ধরেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটের দাবি জানিয়ে আসছিল। এদিকে ২০১৭ সালে পাহাড়ে গোলমালের পর থেকে জিটিএ-র কাজ থমকে ছিল। তখন জিটিএ-র চেয়ারম্যান ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। জিটিএ নির্বাচনের দাবিও উঠছিল। অবশেষে এই দুই নির্বাচনের দামাম বাজিয়ে দিল রাজ্য সরকার। জুন মাসেই হতে চলেছে জিটিএ এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পর রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাহাড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর জিইয়ে রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। তাই দেরী না করে আগামী মাসে অর্থাৎ জুনেই গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। ভোটের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে অনুরোধ জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পরে প্রস্তুতি শুরুও করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রসঙ্গত গত মাসে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন শীঘ্রই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে। পাহাড়ে এই মুহূর্তে শুধু পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দু'টি স্তর আছে। সংশোধনী এনে সেখানে জেলা পরিষদ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে পাহাড়ে গোলমালের পর থেকে জিটিএ-র কাজ থমকে ছিল। তখন জিটিএ-র চেয়ারম্যান ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। ওই সময়ে দীর্ঘদিন বিমল ফেরার ছিলেন। এক পুলিশ অফিসারের গুলিতে খুন হওয়ার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন বিমল। পরে জিটিএ ভেঙে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে বিজেপির। পাহাড়ে নতুন করে রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয় গত বিধানসভা ভোটের সময়। বিমল গুরুং পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বিজেপি গোর্খা ল্যান্ড ইস্যুতে পাহাড়বাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান, যত দ্রুত সম্ভব জিটিএ-র ভোট করতে হবে। এদিকে সম্প্রতি দার্জিলিং সফরে গিয়ে পাহাড়ের স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। তবে জিটিএ নির্বাচনে বিজেপি অংশগ্রহণ করবে না বলে আগেই জানিয়েছে। জিটিএ নির্বাচনের ফলে পাহাড়ের কোনও উন্নয়ন হবেনা বলেই আগেই জানিয়েছেন দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্ত।