উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহের বুধবার উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতায় ফেরার কথা তাঁর। এবারের সফরে একাধিক সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর এর মাঝেই সোমবার গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করতে দেখা গেল তাঁকে। জলপাইগুড়িতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছ’টি চা-বাগান। যে কারণে সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিকরা। সেই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে সোমবার বন্ধ হয়ে যাওয়া চা-বাগানগুলি অধিগ্রহণ করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে সোমবার বানারহাটে জনসভার মঞ্চ থেকে এই কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বন্ধ হওয়া ছটি চা বাগান সরকার নিয়ে নেবে। আর বন্ধ হওয়া চা বাগানের শ্রমিকদের মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়েও সোমবার ফের মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাব। একশো দিনের কাজের ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এটা আমাদের অধিকার। রবিবার আলিপুরদুয়ারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকেও চা-শ্রমিকদের বিনামূল্যে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
সব চা বাগানের উদ্বৃত্ত জমি নিয়ে, সে জমিতে পাট্টা দেওয়ার রাজ্য সরকারি সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ছ’টি চা বাগান, যেগুলি বন্ধ আছে, সেগুলি আমরা নেব। বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের এই মাস থেকেই দেড় হাজার টাকা করে দিতে বলেছি।” প্রশাসন সূত্রে খবর, শীতের মরসুমে জলপাইগুড়ি জেলায় বন্ধ চা বাগান কম-বেশি পাঁচটি। জলপাইগুড়িতে রায়পুর, রিয়াবাড়ি, ধরনীপুর, সুরেন্দ্রনগর, রেডব্যাঙ্ক চা– বাগান বন্ধ রয়েছে। তাই সমস্যায় পড়েছেন চা–বাগানের বহু শ্রমিক। ধুঁকতে থাকা চা বাগান ধরলে সংখ্যাটি আরও বেশি। আলিপুরদুয়ার এবং শিলিগুড়ির তরাই এলাকা ধরলে সংখ্যাটি আরও বাড়বে। রাজ্যে কম-বেশি ১৭টি চা বাগান বন্ধ অথবা ধুঁকছে বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি। তাই কোন ছ’টি চা বাগানের কথা মুখ্যমন্ত্রী বলতে চেয়েছেন, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না প্রশাসন।
প্রসঙ্গত গত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছিল, পাহাড়ের পাঁচটি চা বাগান অধিগ্রহণ করা হবে। পরে টি বোর্ড অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও তা হয়নি। এই নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করছেনে মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগের বার ভোটের সময়ে পাঁচটি চা বাগান খুলবে বলেছিল, কোথায় গেল?”
এদিকে বন্ধ চা-বাগানের জমি, বাড়তি জমি ফিরিয়ে নিয়ে চা-শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার কথা রবিবারই আলিপুরদুয়ারে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাট্টা পাওয়া এই জমি হোম-স্টে, কিচেন গার্ডেন-সহ অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি উত্তরবঙ্গ সফরে ১৩ হাজার পাট্টা দেওয়ার কথা রয়েছে। জলপাইগুড়ির বানারহাটে সোমবার চা-শ্রমিকদের হাতে জমির পাট্টা দিয়েছেন তিনি।