scorecardresearch
 

আলিপুরদুয়ারে পাত্র উধাও প্রেমিকার সঙ্গে, পাত্রীকে অসম্মানের হাত থেকে বাঁচালেন সিভিক ভলান্টিয়ার

আচমাকাই ছন্দপতন। শুধু মাত্র একটি ফোনে। হুল্লোড়ের আসরে তখন শুধুই চাপা কান্নার রোল। ফোন এল বিয়ের ঘটকের তরফ থেকে।

Advertisement
নতুন জীবনে সুপ্রিয়া দাস এবং ধীরেশ দাস নতুন জীবনে সুপ্রিয়া দাস এবং ধীরেশ দাস
হাইলাইটস
  • লগ্নভ্রষ্টা হতে চলা তরুণীকে সিঁদূর পরিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার
  • যৌতুক নিয়েও অবশেষে বিয়ের পিড়িতে বসলেন না পাত্র
  • কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ের পরিবারের সকলে

অসীম দত্ত

বিশ্ব নারী দিবসে লগ্নভ্রষ্টা হতে চলা তরুণীকে সিঁদূর পরিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার। একদা কেএলও জঙ্গি উপদ্রুত কুমারগ্রাম থানার আইসি-র উদ্যেগে বিশ্ব নারী দিবসেই লগ্নভ্রষ্টা এক যুবতীকে বিয়ে করে নারীর সন্মান বাঁচিয়ে দিল এক যুবক।

১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নগদ, সোনার আংটি,গলার চেন মোটরবাইক যৌতুক নিয়েও অবশেষে বিয়ের পিড়িতে বসলেন না আলিপুরদুয়ার কোর্টে কর্মরত সরকারি হোমগার্ড মিন্টু বর্মন। এমনই অভিযোগ উঠেছে।

আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সুপ্রিয়া দাস। বাবা রাসু দাস। পেশায় ছোট ব্যাবসায়ী। মাসখানেক আগেই মিন্টু এবং তাঁর পরিবার ঘটকের মারফৎ কুমারগ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়ার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের পাঁচকোলগুড়ির মিন্টুর বিয়ে ঠিক হয়।

পূর্ব নির্ধারিত কথা অনুযায়ী বিয়ের আগেই হবু বর মিন্টুকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা নগদ, সোনার চেন, হাতের আংটি,একট মোটর সাইকেল  দিয়ে দেয় কন্যাপক্ষ।

বিশ্ব নারী দিবসে সুপ্রিয়া ও মিন্টুর চার হাত এক হত। অন্তত সেই স্বপ্নেই বিভোর ছিলেন তরুণী সুপ্রিয়া। সোমবার বিকেলে মহা সমারোহে কুমারগ্রামে সুপ্রিয়ার বাড়িতে চলছিলো বিয়ের অনুষ্ঠান।

সানাই, ব্যান্ডপার্টির আওয়াজে তখন একদা  কেএলও জঙ্গি উপদ্রুত এলাকা কুমারগ্রামের দূর্গাবাড়ি এলাকা জমজমাট। আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে একমাত্র মেয়ের জীবনের সঙ্গী।

আচমাকাই ছন্দপতন। শুধু মাত্র একটি ফোনে। হুল্লোড়ের আসরে তখন শুধুই চাপা কান্নার রোল। ফোন এল বিয়ের ঘটকের তরফ থেকে। ফোনের ওপার থেকে বিয়ের ঘটক কন্যার বাবা রাসুবাবুকে জানালেন, বিয়ের পাত্র মিন্টু, তাঁর ভালবাসার পাত্রীকে নিয়ে পলাতক।

মুহুর্তেই সব কিছু লণ্ডভণ্ড। কান্নার রোল বিয়ে বাড়ি জুড়ে। বলা ভাল, কুমারগ্রামের লোডশেডিংয়ে অভ্যস্থ এই দুর্গাবাড়ি এলাকায় তখন শ্মশানের নীরবতা।

Advertisement

নিরুপায় মেয়ের পরিবারের ফোন গেল কুমারগ্রাম থানায়। ঘটনাস্থলে এলেন কুমারগ্রাম থানার আইসি বাসুদেব সরকার। তাঁকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ের পরিবারের সকলে।

আইসি বলেন, গ্রামে-গঞ্জে লগ্নভ্রষ্টা মেয়েরদের নিয়ে নানা কথা হয়। আমি ওই মেয়েটিকে লগ্নভ্রষ্টা হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমার থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রস্তাব দিই।

এবং মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। তারা সেই প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায়। বিয়েতে রাজী হয় আমার সেই সিভিক ভলান্টিয়ার পাত্র ধীরেশ দাস। 

অবশেষে ধীরেশ আর সুপ্রিয়ার চার হাত এক হলো। বিশ্ব নারী দিবসে লগ্নভ্রষ্টার হাত থেকে বাঁচল এক কন্যা। বাসুদেব সরকার জানান, অভিযুক্ত মিন্টু এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে যা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।

 

Advertisement