দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলির জন্য সরকারি অনুদানের পরিমাণ আরও বাড়ানো হল। এ বছর দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবছর ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, গতবারের তুলনায় ১৫ হাজার টাকা বাড়ানো হল অনুদান। আগামী বছরে অনুদানের অঙ্ক ১ লক্ষ টাকা করা হবে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, বিদ্যুতের বিলেও ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুর্গাপুজোয় অনুদান ঘোষণা করেছিলেন মমতা। প্রথমে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনা অতিমারির সময় অনুদান বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছিল। ২০২২ সালে অনুদানের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করা হয়। গত বছর আরও ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা হয়েছিল। এবার ১৫ হাজার টাকা বাড়ানো হল।
আগামী বছর অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করা হবে বলে এদিন আগাম ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে এদিন মমতা বলেন, 'এবার ১৫ হাজার যদি বাড়তে পারে, তা হলে আগামী বছর ১ করে দেব। দু'বছরের ঘোষণা করে দিলাম আগাম।'
অনুদান প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'আজ বাজেট হয়েছে। আমরা শূন্য পেয়েছি। অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়েও আমরা উৎসবকে ভুলতে পারি না। বিদ্যুতের ছাড় ৬৬ শতাংশ ছিল গতবার। এবার ৭৫ শতাংশ ছাড় দিতে বলেছি।' এরপরেই অনুদানের পরিমাণ প্রসঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী তুলতেই অনেকে ১ লক্ষ টাকা করার দাবি তোলেন। যা শুনে মমতা বলেন, 'একসঙ্গে এতটা লাফিয়ে বাড়ানো যায়! আস্তে আস্তে ওঠো। প্রথম শুরু করেছিলাম ২৫ হাজার দিয়ে। আস্তে আস্তে ৭০-এ এসেছে। এবার সব করে দিলে, আসছে বছর কী হবে। এবার ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার করে দিলাম।' বস্তুত, পুজোর অনুদান নিয়ে প্রায়শই বিতর্ক হয় রাজ্য রাজনীতিতে। এই নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। অতীতে এই নিয়ে মামলাও হয়েছে আদালতে।
মঙ্গলবার দুর্গাপুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করা হয়, সেই নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, 'কেউ ১১২ ফুটের পুজো করলাম, লেজারের খেলা করলাম, এতে তো অন্যের ক্ষতি হতে পারে, পদপিষ্ট হতে পারে।' এই প্রসঙ্গে শ্রীভূমির পুজোর প্রসঙ্গও টানেন মমতা। সুজিত বসুর নাম করে বলেন, ''শ্রীভূমির পুজোর জন্য এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল, এটা যেন না হয়।'
অন্য দিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখন তো মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। অবশ্য এর জন্য আমিই অনেকটা দায়ী। মা অনেক আগে চলে আসেন।' প্রসঙ্গত, পুজোর অনেক আগে থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ অনেক পুজো কমিটিই চান মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে। সকলের আবদার রাখতেই অনেক আগে থেকে উদ্বোধন শুরু করেন মমতা। সেই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য।