সোমবার সকালে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে একটা মালগাড়ি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পর নীচবাড়ি ও রাঙাপানি স্টেশনের মধ্যে ঘটে যায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। যে ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বহু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খবর পেয়েই ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে গিয়ে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখেন। সন্ধেয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে তিনি আহতদের দেখতে যান। সেখান থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, দু-তিনটে দুর্ঘটনা দেখেছি। আমি নিজে গিয়ে মুম্বইয়ে গিয়ে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস চালু করেছিলাম। এখন রেলের কী হচ্ছে জানিনা।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'এখন মানুষকে রেল ছেড়ে বাইক, সাইকেল নিতে হয়। মানুষ জানে না কীভাবে বাড়ি যাবে। রেলের বাজেট কমেছে। আগের মতো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কর্মীরাও খুশি নয়। নতুন মেট্রো আর রেল প্রকল্প হয়েছে আমার আমলে। এগুলো নতুন নয়। বন্দেভারতের নামে পাবলিসিটি হয়েছে। কিছু হয়নি, গোটাটাই রেলের অবহেলা। হাইলি টেকনিক্যাল উন্নতি হয়েছিল আমার আমলে। সব সিস্টেম রয়েছে কিন্তু দেখার কেউ নেই।'
এদিন মমতা প্রশ্ন তোলেন, 'আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে অ্যান্টি কলিউশন ডিভাইস লাগিয়েছিলাম। কোঙ্কন রেল সেই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিল। আমি মাডগাঁওয়ে তাদের কারখানায় গিয়েছিলাম। সেই ডিভাইস কোথায় গেল?' রেল দুর্ঘটনা রুখতে সরকারের সামগ্রিক সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'রেলের অবস্থা শুধরোতে কোনও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। শুধু বাইরে থেকে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমি দুরন্ত এক্সপ্রেস চালু করেছিলাম। সেটাই কি এখন বন্দে ভারত বলে চালানো হচ্ছে?'
এদিকে, আজ রাত্রি ১২টার সময় শিয়ালদা স্টেশনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি হেল্প ডেস্ক করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হেল্প ডেস্কের দায়িত্বে থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। রাজ্য পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে ছোট মাঝারি ও বড় সরকারি বাসের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে শিয়ালদা স্টেশনে। যাতে সমস্ত যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।