আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসছেন রাজ্যবাসী। এই আবহে গত মাসে মুখ্যমন্ত্রীর 'উৎসবে ফিরুন' মন্তব্য সমালোচিত হয়েছিল নানা মহলে। 'পুজোয় আছি, উৎসবে নেই'-এ শামিল হয়েছেন অনেকেই। এই প্রেক্ষাপটে মহালয়ার দিন ফের এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, 'অনেকে বলেন কেন পুজো করব, কেন উৎসব করব, আরে আমাদের ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। আমরা সব কাজ করি, ধর্ম-কর্মও মানি। সর্বধর্ম সমন্বয় রীতি আমাদের। সবাইকে নিয়ে চলার মধ্যে আনন্দ রয়েছে।'
বুধবার মহালয়ায় কলকাতা-সহ জেলার বিভিন্ন পুজোর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, 'জাগো বাংলা'র উৎসব সংখ্যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুজো-উৎসবের প্রসঙ্গ টানেন তিনি। আবার, এই দিনই শহরে আরজি করকাণ্ডে বিচারের দাবিতে মহামিছিল চলছে। ফের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই আবহে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব নিয়ে ফের মন্তব্য করলেন মমতা।
মঙ্গলবার থেকেই পুজোর 'সূচনা' করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার অন্যতম হেভিওয়েট পুজো শ্রীভূমির সূচনা করেন তিনি। দেবীপক্ষের আগে পুজোর উদ্বোধন-বিতর্ক মমতা বলেছিলেন, 'অনেকে বলবেন, পিতৃপক্ষে মমতা ব্যানার্জি উদ্বোধন করে দিলেন। অত বোকা মমতা ব্যানার্জি নয়, এইটুকু অন্তত বোঝে। ধর্ম-কর্ম সম্পর্কে ষথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে।আমার বাবাকে সবাই পণ্ডিত মশাই বলতেন, উনি রোজ চণ্ডীপাঠ করতেন। ছোট থেকে দেখে অভ্যস্ত।'
গত কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপুজো দেখতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়ের ছবি মহালয়া থেকেই দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে, কলকাতায় অনেক পুজোর উদ্বোধন মহালয়ার আগেই হয়ে যায়। গত বছর মহালয়ার আগেই পুজো উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবীপক্ষের আগে কেন পুজো উদ্বোধন, তা নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-সহ বিরোধীদের। তবে এবার উদ্বোধন করেননি মমতা। পুজোর 'সূচনা' করলেন। মহালয়ার আগে পুজো শুরু হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত জুলাই মাসে মমতা বলেছিলেন, 'এখন তো মহালয়ার দিন থেকেই পুজো উদ্বোধন শুরু হয়ে যায়। এর জন্য আমিই অনেকটা দায়ী। এটা আমারই দোষ। মহালয়ার আগের দিন থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দিই। মা আগে চলে আসেন।' পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই প্রসঙ্গ টানেন মমতা। তিনি আরও বলেছিলেন, 'মহালয়ার আগের দিন থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দিই। মা আগে চলে আসেন। সুতরাং মানুষও পুজো দেখতে বেরিয়ে যান। কারণ পুজোটা ভালবাসি আমরা। এই উৎসব সবার।'