সন্দেশখালিতে কর্তব্যরত পাগড়িধারী আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংকে 'খালিস্তানি' মন্তব্য নিয়ে বিতর্কে ফের মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গে ফের বিজেপিকে নাম না করে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, 'পঞ্জাবি অফিসারের কী দোষ ছিল? সে ডিউটি করছিল। পাগড়ি পরে বলে খালিস্তানি বলে দেবে? মুসলিম অফিসারকে দেখে পাকিস্তানি বলে দেবে?' মঙ্গলবারও এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডলে এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি।
ঠিক কী নিয়ে বিতর্ক?
মঙ্গলবার সকালে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপি নেতারা। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে ধামাখালিতে ব্যারিকেড তৈরি করে শুভেন্দুদের আটকে দেয় পুলিশ। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে বিজেপি নেতাদের। অভিযোগ, সেই সময় সেখানে পাগড়িধারী আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংকে 'খালিস্তানি' বলে মন্তব্য করে বিজেপি নেতারা। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এই মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন যশপ্রীত। পরে এক্স হ্যান্ডলে এই ঘটনার নিন্দায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও পরে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অগ্নিমিত্রা। এই ঘটনায় পদক্ষেপ করা হবে বলে বার্তা দিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, 'অসম্মানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদ করছি। ধর্মীয় বিষয় নিয়ে এমন মন্তব্য করা যায় না। এটি আইনত অপরাধ। যে কোনও পেশায় হোক, কেউ শিখ, কেউ হিন্দু, কেউ অন্য ধর্মাবলম্বী হতে পারেন। এটি করা যায় না। একজন পাগড়ি পরলে খালিস্তানি বলা হবে? আমরা আইনি পদক্ষেপ করব। ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত।'
এদিন ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চে মমতা বলেছেন, 'বাংলার সবচেয়ে বড় কলঙ্ক। বাংলার সংস্কৃতি ছিন্নবিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত চলছে।' অন্য দিকে,বিতর্কে মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি, তাঁরা এমন কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁর কথায়, 'পাকিস্তানি-খালিস্তানি এসব বলার দরকার নেই আমাদের।' শিখ ধর্মকে সম্মান করার কথাও বলেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তাঁর কথায়, 'পাকিস্তানি-খালিস্তানি এসব বলার দরকার নেই আমাদের। ওই অফিসার রূঢ় ব্যবহার করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিজের নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আমি বা আমার সঙ্গীরা কোনও ধর্মকে আক্রমণ করে কিছু বলিনি, বলবও না। আমরা গুরুনানকজিকে প্রণাম করি। শিখ ধর্মকে সম্মান করি। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে শিখদের।'
খালিস্তানি-মন্তব্যের প্রতিবাদে এদিন কলকাতায় মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান শিখ ধর্মাবলম্বীরা। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে ক্ষমা চাইতে হবে। শুভেন্দু পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।