ামেদিনীপুর শহরের এই জগদ্ধাত্রী পুজো রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে। আর ২০ কেজির সোনার গয়না যেমন, নিরাপত্তাও তেমন। মণ্ডপে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল সিকিউরিটি।
জগদ্ধাত্রী পুজোর থিমের লড়াই করতে গিয়ে একেবারে বিরল আয়োজন মেদিনীপুর শহরে। অন্যরকম আয়োজন করতে বিশাল জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে সোনার গহনা দিয়ে ঢেকে দিলেন আয়োজকরা। কুড়ি কেজির বেশি সোনার গহনা দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুরের ক্ষুদিরাম নগর আবির্ভাব পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। প্রতিবারই আলাদা কিছু করার চেষ্টা করেন আয়োজকরা। তবে এবার যা করেছেন তা সম্পূর্ণ বিরল। বিশাল সোনার গয়না দিয়ে কার্যত মুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিমাকে। আর তার প্রহরারও কড়া বন্দ্যোবস্ত করা হয়েছে।
মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম নগর এলাকার আবির্ভাব পুজো কমিটি গত ১৫ বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো করছে। আর প্রতিবারই কিছু না কিছু চমক থাকে। তবে এবারের পুজো যেন অন্য়বারের পুজোকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
কিন্তু এত সোনা এল কোথা থেকে? আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই প্ল্যান করার পর থেকেই কলকাতার নামী সোনার ব্যবসায়ী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর প্রায় ৪ মাস ধরে চলে আলোচনা। একাধিক নিয়ম ও শর্ত মেনে সেখান থেকে কুড়ি কেজির বেশি সোনার গয়না এনে সাজানোর হয়েছে। মেদিনীপুর শহরের জেলা পরিষদ চত্বরের উল্টো দিকেই এই মণ্ডপ।থিম হস্তিনাপুরের রাজমহল। সেটাও পুরো সোনালী রঙের।
মেদিনীপুর শহরের নামকরা মন্ডপ প্রস্তুতকারকরা মণ্ডপ সাজিয়েছেন। কাপড় প্লাই ও থার্মোকল দিয়ে এই মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে। ভিতরে রয়েছে সোনার গহনাতে ঢাকা বিশাল জগদ্ধাত্রী প্রতিমা।
প্রশাসনের কাছে বিশেষ অনুরোধের মাধ্যমে মণ্ডপ ও প্রতিমা পাহাড়ায় বিশেষ নিরাপত্তারও আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশের আগেই পিচ রাস্তা থেকে বিশাল স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা সবসময়ে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছেন।
একেক সময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। মন্ডপে প্রবেশ করলেই সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নজর রাখছে। রয়েছে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীও।
প্রতিমার থেকে বেশ কিছুটা দূরেই লোহার ব্যারিকেড দেওয়া রয়েছে। পুলিশবাহিনী পাহারা দিচ্ছেন প্রতিমার সামনেই। প্রবেশ করে প্রতিমা দর্শন করে দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
গত দুই দিন ধরে এই প্রতিমা দর্শনে বিশাল ভিড় হচ্ছে। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ২০ কেজি সোনায় মোড়া প্রতিমা দেখতে আসছেন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে কমিটির কোষাধ্যক্ষ সন্দীপ হাজরা বলেন - গত ১৫ বছর ধরে এই পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। তবে এবার যা হয়েছে এবার তা একেবারেই বিরল। এর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। চার মাস আগে থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই গহনা আনতে হয়েছে। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিমা দর্শন করা যাবে। প্রতিদিনই নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে। এত বড় আয়োজন এই প্রথম। দর্শকের মন জয় করতে পেরেছি। এত ভিড় বুঝিয়ে দিচ্ছে আমাদের আয়োজন সফল।
সংবাদদাতা: শাহজাহান আলি