বিজেপি নেতা এবং অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী সোমবার বর্ধমান জেলা কার্যালয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে এসে একাধিক ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি সরাসরি তার দলের সংগঠনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেছেন, "আমি সংগঠন নিয়ে ১০০% সন্তুষ্ট নই। একজন কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হলে অন্য কর্মী তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা কমে গিয়ে নিজেদের অর্জনের লড়াইয়ে নেতাকর্মীরা বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ছেন।"
সংগঠন এবং দলের প্রতি অসন্তোষ
বর্ধমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মিঠুন চক্রবর্তী জানান, "দলের মধ্যে একে অপরের প্রতি হিংসা বাড়ছে। কর্মীদের একে অপরকে ঠেকানোর প্রবণতা বাড়ছে। এতে দলে একতার অভাব স্পষ্ট। আমি এর সঙ্গে ১০০% সন্তুষ্ট নই।" তার মন্তব্য দলের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ এবং সাংগঠনিক দুর্বলতার ইঙ্গিত বহন করছে।
বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার এবং ভারতের প্রতি দেওয়া বিভিন্ন হুঁশিয়ারির প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "ভারতকে অবমূল্যায়ন করবেন না। এক মিনিটে খেলা শেষ হয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয় নয়, বরং উদ্বেগের কারণ।"
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের উপর কড়া আক্রমণ শানিয়ে মিঠুন বলেন, "রাজ্যে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় তৈরির দায় প্রশাসনের। আমাদের রাজ্যে সন্ত্রাসীরা প্রশিক্ষিত হচ্ছে এবং এটি আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে।"
দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা
বর্ধমানের সাংগঠনিক বৈঠকে মিঠুন দলের কর্মীদের প্রতি বার্তা দেন যে, "সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা এবং একতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বন্ধ না করলে দল সামনে এগোতে পারবে না।"
মিঠুনের মন্তব্যের রাজনৈতিক গুরুত্ব
মিঠুন চক্রবর্তীর এই মন্তব্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ইস্যুতে তার কড়া অবস্থান এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মিঠুন চক্রবর্তীর এই বক্তব্য দলীয় কর্মীদের মনোভাব এবং সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশ ইস্যুতে তার কড়া অবস্থান রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।