বিশ্বজুড়ে বেশ কিছু দেশে Mpox ভাইরাসের কেস দ্রুত বাড়ছে। পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ৪টি মামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। এমনই প্রেক্ষাপটে আগেভাগেই ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নিতে শুরু করল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। MPox-এর ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে তারা। সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদার পুনাওয়ালা বলেন, 'এমপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা লক্ষ-লক্ষ মানুষকে সাহায্য করার জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছি। আশা করছি, এক বছরের মধ্যেই আমরা একটা ভালো খবর পাব।' এর আগে সেরাম ইনস্টিটিউট করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছিল।
MPOX কি?
এমপক্স একটি ভাইরাল রোগ। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস থেকে হয়। অর্থোপক্সভাইরাস গণের একটি প্রজাতি। এমপিক্স আগে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল। এই ভাইরাসটি বিজ্ঞানীরা ১৯৫৮ সালে প্রথমবার শনাক্ত করেছিলেন। বানরের মধ্যেই সবার প্রথম এই 'পক্স-জাতীয়' রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
mpox কীভাবে ছড়ায়?
Mpox একটি ভাইরাল সংক্রমণ। মূলত সংক্রামিত ব্যক্তি বা প্রাণীর সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে। Mpox সংক্রামিত ত্বক বা অন্যান্য ক্ষত যেমন মুখ বা যৌনাঙ্গের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রামিত প্রাণীর সংস্পর্শে থাকেন, এমন ব্যক্তিদেরই এমপক্স হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জামাকাপড়, ট্যাটু শপ, পার্লার বা অন্যান্য পাবলিক প্লেসে ব্যবহৃত জিনিসগুলির মতো দূষিত জিনিস ব্যবহারের মাধ্যমেও এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সংক্রামিত প্রাণীর কামড়, আঁচড়, খাওয়া বা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমেও ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এমপক্সের লক্ষণ:
এমপক্সে আক্রান্তদের শরীরে ফুসকুড়ি ওঠে। হাত, পা, বুক, মুখ, যৌনাঙ্গের চারপাশে এমন ফুসকুড়ি উঠতে পারে। এই pustules-পস্টিউল (পুঁজ ভরা বড় সাদা বা হলুদ ফোঁড়া জাতীয়) পরে শুকিয়ে শক্ত মতো হয়ে যায়। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা এবং গা-হাত-পায়ে যন্ত্রণা।
বিরল ক্ষেত্রে, ভাইরাসটি থেকে মারাত্মক পরিণতিও হতে পারে।
সংক্রামিত ব্যক্তি ফুসকুড়ি ওঠার আগে থেকেই এবং নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত অনেক ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে।
উপসর্গ কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তথ্যানুযায়ী, ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ২১ দিনের মধ্যেই এমপক্সের লক্ষণগুলি আসতে শুরু করে।
এমপক্সের সংস্পর্শে আসার ৩ থেকে ১৭ দিন পর থেকে উপসর্গ দেখা দেয়। এই সময়ের মধ্যে, আক্রান্তের কোনও উপসর্গ দেখা যায় না।
mpox-এর চিকিৎসা
MPOX-এর জন্য এখনও কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ব্যথা এবং জ্বরের মতো উপসর্গের ওষুধ দেওয়ার সুপারিশ করে। সিডিসি-র গাইডলাইন অনুযায়ী, রোগীর যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে এবং তাঁর চর্মরোগ না থাকে, সেক্ষেত্রে তিনি কোনও চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। শুধুমাত্র বিশ্রাম ও যত্নই যথেষ্ট।