আরামবাগের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা ফায়েজউদ্দিন খানের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় নিজের বাড়ির বাথরুম থেকে, যা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা ও জল্পনা শুরু হয়। পরিবারের দাবি, ফায়েজউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী রেশমা খাতুন এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন এবং তাঁর হাতেই ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড।
ঘটনাস্থল ও ঘটনার বিবরণ
ফায়েজউদ্দিন খান, তৃণমূল পরিচালিত টোটো ইউনিয়নের সম্পাদক ছিলেন। তিনি আরামবাগের বাসুদেবপুর এলাকায় থাকতেন। চারদিন আগেই ফায়েজউদ্দিন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রেশমা খাতুন এই ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় সেই বাড়ির বাথরুম থেকে, যেখানে তার দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। ঘটনার পরপরই আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে তৃণমূল সমর্থক এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন দেখা দেয়।
খুনের অভিযোগ ও স্ত্রীর ভূমিকা
ফায়েজউদ্দিনের পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রী রেশমা খাতুনের সাথে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না। রেশমা বিয়ের পর থেকে ফায়েজউদ্দিনকে আরামবাগ শহরে স্থায়ীভাবে থাকতে বাধ্য করছিলেন এবং এর জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। অভিযোগ উঠছে, স্ত্রীর সাথে এই পারিবারিক কলহই হয়তো এই হত্যাকাণ্ডের কারণ। ঘটনার পর আরামবাগ থানার পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করেছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পারিবারিক পটভূমি
ফায়েজউদ্দিনের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে কয়েক বছর আগে ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর রেশমার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তবে এই বিয়ের পর থেকেই তাদের সম্পর্কের অবনতির কথা বারবার উঠে এসেছে পরিবারের তরফে। তাদের সম্পর্কের তিক্ততা নিয়েই উঠছে নানা প্রশ্ন, যা পুলিশি তদন্তের অংশ।
পুলিশি তদন্ত
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আপাতত প্রাথমিকভাবে স্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে পুলিশি জেরা চলছে, তবে পুরো ঘটনার আসল সত্য উদঘাটনের জন্য আরও তদন্ত প্রয়োজন। বাথরুম থেকে পাওয়া রক্তের দাগ এবং অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, এই ঘটনা পরিকল্পিত হতে পারে এবং এর পেছনে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন।
আরামবাগে চাঞ্চল্য
তৃণমূল নেতার এই আকস্মিক মৃত্যু আরামবাগের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন ফেলেছে। শহরে এই ঘটনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। পরিবার এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা দেখা গেছে। তৃণমূল সমর্থকরাও এই ঘটনায় স্তম্ভিত এবং তারা দ্রুত সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।