উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া টাকি দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য জগত বিখ্যাত। কারণ একমাত্র টাকির ইছামতি নদীতেই দুর্গা বিসর্জনের সময় দেখা যায় দুই বাংলার মিলনোৎসব। ইছামতী নদীতে দুই দেশের প্রতিমা বিসর্জন দেখতে দেশ-বিদেশের মানুষ ভিড় করেন দশমী বা একাদশীতে। অবিভক্ত বাংলায় টাকির ইছামতীর বুকে বিসর্জনের উৎসবের ঐতিহ্য কয়েকশো বছরের। বিজয়ার দিন ইছামতীর বুকে থাকে না কোনও সীমারেখা। একই নদীর বুকে ভারত বাংলাদেশের নৌকা নামে দু’দেশের প্রতিমা নিয়ে। সাক্ষী থাকেন কয়েক লাখ মানুষ। বিগত বছরগুলিতে করোনার থাবায় সেভাবে জমেনি দুর্গা পুজোর উৎসব। তবে এবার সেই বিধিনিষেধ নেই। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় এবার নজর কেড়েছে। দশমীর সকাল থেকে ইছামতীতে শুরু হয়েছে দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে ইছামতীর জাঁকজমকপূর্ণ বিসর্জন প্রায় বন্ধ ছিল। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ২০২২ সালে বিসর্জন নিয়ে পুরনো ছন্দে ফিরেছিল টাকি। আগের বছরের মতো এবছরও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের টাকি উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে দেবী দুর্গার বিসর্জন নিয়ে।
উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে উৎসবের মেজাজ দশমীর সকাল থেকেই। এপারে বসিরহাটের টাকি, ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। মাঝখানে বয়ে চলেছে ইছামতী। প্রথমে টাকি রাজবাড়ি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হয়। ইছামতীর রাজবাড়ি ঘাট ছাড়াও ঘোষবাবুর ঘাট, সৈয়দপুরের ঘাটে চলছে প্রতিমা নিরঞ্জন।এরই মধ্যে রয়েছে দুই দেশের প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও নির্দেশাবলি। তবে এবার টাকির ইছামতীর বিসর্জনে সবুজ সংকেত মিললেও ইছামতী বক্ষে মাঝ বরাবর টানা হয়েছে সীমারেখা। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিনীধিদের তরফে ফ্ল্যাগ মিটিং করে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
কয়েক বছর হলো নিরাপত্তার কারণে টাকির বিজয়ার উৎসবে ইছামতীর জলসীমায় টানা হয় কাল্পনিক সীমারেখা। । একই নদীর বুকে ভারত বাংলাদেশের নৌকা নামে দু’দেশের প্রতিমা নিয়ে। মনে করা হচ্ছে এবার প্রতিমা নিরঞ্জন দেখার সাক্ষী হবেন কয়েক লাখ মানুষ। বিসর্জন বেলা সাড়ে বারোটা থেকে শুরু হয়ে চলবে বিকেল সাড়ে চারটে অবধি। বিকেল পাঁচটার মধ্যে নদী থেকে সকলকে উঠে যেতে হবে।