সন্দেশখালিকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শাহজাহানকে এনকাউন্টার করে দিতে পারে রাজ্য সরকার, এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন সেলিম। তাঁর দাবি, 'শাহজাহান পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের অতিথি হয়ে রয়েছেন। পুলিশি সুরক্ষায় পুলিশের গেস্ট হাউসে রয়েছেন।'
এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও যেমন নিশানা করেছেন সেলিম, তেমনই আক্রমণ করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে। বলেছেন, 'প্রমাণ কীভাবে নষ্ট করা যায়,মমতা এবং অভিষেকের যোগের প্রমাণ কীভাবে নষ্ট করা যায়, এই নিয়ে আলোচনা চলছে। এই ভাবে রাজীব কুমার সব নথি পেয়ে যাবেন। তারপরে ঘোষণা করবেন হয়তো ওঁকে (শাহজাহান) ধরে নিয়েছেন।' এরপরই সেলিম বলেছেন, 'হতে পারে শাহজাহানকে এনকাউন্টার করে দিল।' তাঁর সংযোজন, 'তৃণমূল নেতাদের বোঝা উচিত, মমতা কেবল ভাইপোকে রক্ষা করবেন। অন্য কাউকে নয়।'
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। ধৃত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে শিবপ্রসাদকে। তবে শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। এত দিন পরও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। বৃহস্পতিবার শাহজাহানের ভাই সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধেও বেআইনি ভাবে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের একাংশ। শিবপ্রসাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্য দিকে, শাহজাহানকে ফের তলব করেছে ইডি। শুক্রবার শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ হাওড়ার এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি।
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতায় মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালিতে উত্তেজনার জন্য গেরুয়া বাহিনীকেই দুষেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, '১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা মুখে মাস্ক পরে ছবি তুলছে, ধরা পড়েছে। বিজেপির কর্মী। একটা এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আগে টার্গেট শেখ শাহজাহান...কারও ক্ষোভ থাকতে পারে। সরকার পদক্ষেপ করবে...সন্দেশখালিতে আরএসএসের বাসা রয়েছে।'