মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Alapan Bandyopadhyay) বদলি ইস্যুতে তৈরি হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আবহ। আজ সোমবারই সকাল ১০টার মধ্যে দিল্লিতে রিপোর্ট করার কথা ছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু এদিন দিল্লিতে নয়, নবান্নেই প্রবেশ করতে দেখা যায় আলাপনবাবুকে। যার জেরে এই ইস্যুতে কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি এখানেই থামবে না বলে মনে করছেন প্রশাসনিকমহলের কেউ কেউ। এক্ষেত্রে কেন্দ্র আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে পালটা কোনও পদক্ষেপ করতে পারে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
এছাড়াও গোটা ঘটনায় আরও একটি একটি প্রশ্ন উঠে আসছে তা হল, কেন্দ্রের নির্দেশে একজন আইএএস (IAS) অফিসারের বদলি কি এইভাবে আটকাতে পারে রাজ্য? এই প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার তথা প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন (Ardhendu Sen) জানাচ্ছেন, সেই অধিকার রাজ্যের আছে, তবে তার পিছনে থাকতে হবে জোরালো যুক্তি। এছাড়া অনেক সময় আবার, সেই আইএএস অফিসার নিজেও দিল্লি যেতে চান না, তখন রাজ্য সরকারকে দিয়েই সেটা বলিয়ে নেওয়া হয়। তবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা তেমন নয়। এক্ষেত্রে যেহেতু তিনি কোভিড ও দুর্যোগ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেহেতু প্রশাসনিক কাজ বিঘ্নিত হতে পারে এমন যুক্তি দেখিয়ে রাজ্য সরকার তাঁকে নাও ছাড়তে পারে বলেই মনে করেন অর্ধেন্দু সেন।
কিন্তু নির্দেশ না মানায় বা নির্দিষ্ট সময়ে দিল্লিতে রিপোর্ট না করায় কেন্দ্র কি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে? অর্ধেন্দু সেনের মতে, কেন্দ্র চাইলে পদক্ষেপ করতে পারে, ডিসপিউটে যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে যেভাবে বিভিন্ন বিষয়কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তারপর আর কেন্দ্র কেমন কোনও পদক্ষেপ করবে না বলেই ধারনা অর্ধেন্দুবাবুর।
প্রসঙ্গত রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির মেয়াদ আজই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান কোভিড (Covid 19) পরিস্থিতিতে তাঁকে আরও তিন মাস ওই পদে বহাল রাখার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানায় রাজ্য। সেই আবেদন মঞ্চুরও করে কেন্দ্র। কিন্তু তারপরেই দিল্লিতে ডেকে পাঠান হয় আলাপনবাবুকে। যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে এই নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে সাংবাদিক বৈঠক করে, আর এবার চিঠি দিয়ে সেই আবেদন জানান তিনি। এখন দেখার কী হয় কেন্দ্রের পরবর্তী পদক্ষেপ।