রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি হতে পারে, এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলে 'নিষ্ক্রিয়'। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর বাবা তথা বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দুর দূরত্ব রচনা হয়েছে। এই আবহে রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন বাংলায় অশান্তির আশঙ্কা জানিয়ে শাহকে দিব্যেন্দুর চিঠি আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
আগামী সোমবার অযোধ্যায় বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরকে সামনে রেখে বিজেপি 'ফায়দা' তুলতে চাইছে বলে একযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। রাম মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী দলের নেতারা। ওই দিন কলকাতায় সংহতি মিছিল করার ডাক দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মিছিলের ফলে অশান্তি বাঁধতে পারে বলে পরোক্ষে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন দিব্যেন্দু।
চিঠিতে তমলুকের সাংসদ লিখেছেন, 'কয়েক জন নেতা সংহতি দিবসের নাম করে আগুন জ্বালাতে চাইছেন।'ঘটনাচক্রে বুধবার মমতার ওই মিছিল ঠেকাতে বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। ওই দিন মিছিল হলে সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে, এই মর্মে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
শাহের পাশাপাশি এই নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও চিঠি লিখেছেন দিব্যেন্দু। ক'দিন আগেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন শিশির-দিব্যেন্দু। যদিও তা 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন তাঁরা।
তমলুক থেকে জোড়াফুল প্রতীকে লড়েছিলেন দিব্যেন্দু। ২০২১ সালের পর রাজনৈতিক পটভূমিতে বদল এসেছে। ক'মাসের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। আবার কি ভোটে লড়বেন দিব্যেন্দু? এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি bangla.aajtak.in-এ সাংসদ বলেছেন, 'দাঁড়াচ্ছি না, দাঁড়াচ্ছি আমি কী করে বলব। মানুষ চাইলে দাঁড়াব। ৫ বছর ধরেই মানুষের কাজ করছি। যাঁরা মানুষের কাজ করেন, তাঁদের নতুন করে ভোটের প্রস্তুতি নিতে হয় না।' ভোটে লড়লে কোন প্রতীকে লড়বেন? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়েছেন দিব্যেন্দু। বলেছেন, 'লোকসভা এখনও শেষ হয়নি। ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়নি। এখনও দেরি রয়েছে।' শুভেন্দু-প্রসঙ্গ শুনেই কথা বলতে চাননি তিনি। তৃণমূলে প্রবীণ-নবীন বিতর্কে দিব্যেন্দু বলেছেন, 'বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে নবীন-প্রবীণ থাকতে পারে, যে এই বয়সের পর ভোটে দাঁড়াবেন না। ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তো এখনও সাংসদ। একটা কথাই বলতে পারি, প্রবীণদেরও যেমন প্রয়োজন, নবীনদেরও প্রয়োজন।'