যারা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, তারাই এখন উদ্বোধন করতে আসছেন। সোমবার নাম না করে অমিত শাহ তথা বিজেপি নেতৃত্বকে কটাক্ষ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ডায়মন্ডহারবারের মশাট খাজেরপোল হাসপাতালের মাঠে বস্ত্র বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদ।
এদিন অভিষেক বলেন, 'যারা ২-৩ বছর আগে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, সাংবাদিক বৈঠক করে বলত, বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, সেই বহিরাগত নেতাদের আজ বাংলায় দুর্গাপুজো উদ্বোধন করতে আসতে হচ্ছে। এটাই বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের জয়। সত্যের জয়।'
অভিষেক আরও বলেন, 'আজ বাংলার মানুষ প্রমাণ করছে, বাংলা অশান্তির জায়গা নয়। বাংলা সভ্যতা, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি, শান্তির ভূমি। কত চেষ্টা করেছিল ডায়মন্ডহারবারে অশান্তি করার। সাতগাছিয়া বিধানসভা, বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লকে নহাজারি বলে একটি অঞ্চলে হিন্দু-মুসুলমানের মধ্যে দাঙ্গা লাগিয়ে দিল। যাতে বিজেপির ফল ভাল হয়। যে অঞ্চলে দাঙ্গা হয়েছে, সেই বুথে বিজেপি হেরেছে।'
বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ডায়মন্ডহারবারে নির্বাচনে জেতার জন্য ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, '২০২১ সালে আপনারা দেখেছেন, যখন কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ছে, তখন বাংলাকে ভাতে মারার চক্রান্তের পাশাপাশি মানুষকে প্রাণে মারার চক্রান্ত হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে আট দফায় বাংলায় নির্বাচন করা হয়েছিল, যাতে বিজেপির সুবিধা হয়।'
তিনি আরও ব্যাখা করে বলেন, 'ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে ৭টি বিধানসভা রয়েছে। এর মধ্যে একটি লোকসভা কেন্দ্রে ৩ দফায় ভোট করা হয়েছিল, যাতে ভারতীয় জনতা পার্টির সুবিধা হয়।'
অভিষেক বলেন, 'আপনারা দেখুন আমরা বলেছিলাম, যে নির্বাচনের সময়ে যারা ভোট চাইতে আসছে, তাদেরকে মানুষের দুঃখে, মানুষের বেদনায়, মানুষের অসুবিধায়, বিপদে-আপদে পাবেন না। কিন্তু আপনাদের পাশে থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুই-আড়াই বছর হয়ে গিয়েছে। যারা সেই সময়ে গেরুয়া ফেট্টি ঝুলিয়ে ভোট চাইতে এসেছিল, তাদের আর টিকি দেখা যায়নি। আর আপনার সমস্যা, বিপদে তৃণমূল কংগ্রেস ছুটে গিয়েছে। আমরাও আপনাদের জন্য় কাজ করেছি, আপনারাও আমাদের দুই হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন।'
১০০ দিনের কাজ ঘিরে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচির উল্লেখও করেন অভিষেক। তিনি বলেন, '১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে যেভাবে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চক্রান্ত করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দিল্লিতে গিয়েছি আমরা। আমাদের কৃষি ভবন থেকে জোর করে, টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের হাতে মহিলা সাংসদদের নিগৃহীত হতে হয়েছে। তার একদিনের ব্যবধানে কলকাতায় ১ লক্ষ লোক নিয়ে রাজভবনে মিছিল করে গিয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ধর্নায় ৫ দিন বসেছি। বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ। ২ বছর ধরে মানুষ ১০০ দিনের কাজ করে বাড়িতে বসে আছে। বাংলায় জেতেনি বলে কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে।'