গত লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারের ফলাফল রাজ্যের শাসকদলের অনুকূলে যায়নি। এরই মাঝে আগামী লোকসভা নির্বাচনে শাসক দলের রাজ্য নেতৃত্ব দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে। তবে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে গভীর চিন্তায় রেখেছে গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৮ টি লোকসভা আসনের ফলাফল। এই আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে শাসক দলের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র। কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা তৃণমূলের দশরথ তিরকেকে আড়াই লক্ষ ভোটে হারিয়ে দেন। গত বিধানসভা নির্বাচনেও রাজ্যের একমাত্র জেলা আলিপুরদুয়ারে পাঁচটি আসনেই শূন্য হাতে ফিরতে হয় ঘাসফুল শিবিরকে।
তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই জেলা থেকে বিজেপিকে উচ্ছেদের ডাক দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপির গড়ে হানা দিচ্ছে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনের পরেই জেলায় বিজেপির সংগঠনের কারিগর তথা তৎকালীন জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকে দলে টেনে নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তারপর থেকেই জেলায় বিজেপির সংগঠনে ভাঙন অব্যাহত।
ইতিমধ্যে জেলার কালচিনি ব্লক থেকেই বিজেপির প্রায় ৫০ জন নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। গত তিনমাসে জেলার প্রায় ৬ হাজার বিজেপি নেতা, কর্মী, তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে নিয়েছেন। অন্যদিকে হাত গুটিয়ে বসে নেই কেন্দ্রের শাসকদলও। ইতিমধ্যেই রাজ্য সভাপতি পদে বদল এনেছে বিজেপি। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত চা বলয়ে সংগঠন বিস্তার ও মজবুত করতে ময়দানে কাজ করছেন সংঘ পরিবারের সদস্যরা। যদিও এই মুহূর্তে রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্ব বিজেপি ঘর ভাঙতে ব্যস্ত। রবিবারও তার প্রমাণ পাওয়া গেল কালচিনি ব্লকে। এদিন ৫০০ বিজেপি সমর্থক যোগ দিলেন তৃণমুলে। রবিবার কালচিনিতে বিজেপির মজবুত ঘাঁটি সেন্ট্রাল ডুয়ার্স এবং জয়গাঁ থেকে মোট ৫০০ জন পদ্মফুল ছেড়ে, ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখান।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি প্রকাশ চিক বড়াইক জানান, তিনি নিজে একজন আদিবাসী। তিনি জানেন বিজেপি কী ভাবে তাঁদের আদিবাসী সমাজকে ভুল পথে চালিত করেছে। এখন সবাই সেই সব বুজরুকি বুঝে গিয়েছেন। তাই বিজেপি এখন জেলা থেকে সাফ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপির জেলা আহ্বায়ক ভূষণ মোদক বলেন, তৃণমূল প্রতিদিন বিজেপি ভাঙার নাম করে নিজেদের দলীয় কর্মীদের যোগদান করায়। তৃণমূল কী করছে সেটা তাঁদের দেখার বিষয় নয়।