সাম্প্রতিক সময় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা গেছে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে। আর এই আবহেই দলের দুর্নীতি নিয়ে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা গেল সৌগতকে। দলের কিছু লোকের খারাপ কাজের জন্য গোটা তৃণমূল দলটাই দোষের ভাগী হচ্ছে— এমনই দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ। অভিজ্ঞ এই নেতা একটি জনসভায় প্রকাশ্যেই মেনে নেন যে, দল এখন অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তবে এরই সঙ্গে তিনি বলেন, এতে দলের কোনও দোষ নেই। দলের কিছু লোক খারাপ কাজ করেছে।
একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতা এবং মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে ইডি। অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন সিবিআই হেফাজতে। সেই প্রসঙ্গে দলীয় কর্মীদের সৌগত বলেন, ‘দলের কিছু লোকের খারাপ কাজের জন্য দল বদনামের ভাগী হচ্ছে।’ তবে দল যে সেই ‘খারাপ কাজ’ মুখ বুজে মেনে নেয়নি সে কথাও মনে করিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদ। উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির জনসভার মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘যাঁরা দুর্নীতি করেছে, যেমন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে দল।’ দমদমের সাংসদ তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতার দাবি, সার্বিকভাবে দেখলে দলের কোনও দোষ নেই। তৃণমূলের মধ্যে কিছু লোক ছিলেন, যাঁরা 'খারাপ কাজ' করেছেন। সৌগত রায় জানান, তৃণমূলের মধ্যে থেকে যাঁরা 'খারাপ কাজ' করেছেন, তাঁদের দল সরিয়ে দিয়েছে। এরপরেই তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও দল বের করে দিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এর মাধ্যমে সরাসরি পার্থকে 'অপরাধী' তকমা দিলেন সৌগত। দমদমের সাংসদ পানিহাটির সভায় আরও বলেন, তৃণমূলের অধিকাংশ কর্মী এবং নেতারাই সৎ। কিন্তু বিরোধীরা এই সুযোগে গোটা দলকে কালিমালিপ্ত করছে। সৌগত রায়ের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের ৯৫ শতাংশ কর্মী সৎ৷ কিন্তু দলের কিছু নেতার খারাপ কাজের জন্য দলের আজকে বদনম হচ্ছে। সৌগত জানান, তৃণমূল দলীয়ভাবে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি, বিরোধীদেরও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। সৌগত রায়ের হুঁশিয়ারি, তৃণমূলের কয়েক জনের জন্য যদি বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেস গোটা দলকেই চোর বলে, তাহলে তাঁরাও বিরোধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
প্রসঙ্গত পার্থর মত গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল অনেক আগেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এমনকি নবান্নের তরফে জেলা প্রশাসনকে এবিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে স্বচ্ছতার নজির গড়তে তৃণমূল মরিয়া।