প্রতিক্ষার অবসান। দেরি হলেও দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেছে উত্তরবঙ্গে। অর্থাৎ এবার সরকারি ভাবেই বঙ্গে পা রাখল বর্ষা। সোমবার একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গ, সিকিম এবং বিহারে প্রবেশ করেছে বর্ষা। ফলে আগামী পাঁচ দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলার বেশ কিছু এলাকায়। সঙ্গে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ জুড়েই বর্ষার বৃষ্টি শুরু
সোমবার উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বর্ষা প্রবেশ করেছে । গত ২৪ ঘন্টায় উপরের পাঁচটি জেলাসহ মালদায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৫ দিন উত্তরবঙ্গের ওপরের পাঁচটি জেলাতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকছে। একটু বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির ফলে দার্জিলিং ও কালিম্পং-এর বেশ কিছু জায়গায় ভূমিধসের সম্ভাবনা থাকছে। ছোট শহরগুলিতে জল জমে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলায় বজ্রপাত-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা কবে আসছে?
সাধারণভাবে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করে ৮ থেকে ১০ জুনের মধ্যে। সেখানে এবার তা ১২ জুন প্রবেশ করল। সেই হিসেব মতো সামনের দুদিনে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার প্রবেশের আপাত সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বর্ষার প্রবেশের জন্য আরও বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। কবে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করবে, তা এখনও সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না।
আপাতত তাপপ্রবাহ এই জেলাগুলিতে
সকালে কিছুটা মেঘলা আকাশের পরে পশ্চিমের জেলাগুলিতে গতকাল বেলা বৃদ্ধির পরে তাপমাত্রা বেড়েছে। সোমবার রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে ৪২ ডিগ্রির কাছে। আপাতত তাপপ্রবাহ থেকে রেহাই নেই দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলির। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং পূর্ব বর্ধমানে ১৬ জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাকি জেলাতে গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে। আপাতত দুদিন তাপমাত্রা বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাতে।
চলবে প্রাক বর্ষার বৃষ্টিও
দক্ষিণবঙ্গে ইতিমধ্যেই প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সবকটি জেলাতেই ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাত ও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বিশেষ করে উপকূলবর্তী ও সন্নিহিত উপকূলবর্তী জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় একটু বেশি বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়ো হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে বীরভূম, ঝারগ্রাম , মেদিনীপুরে। কলকাতা-সহ উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় থাকবে।
কলকাতার আবহাওয়া
সোমবার বিকেল এবং সন্ধের দিকে কালবৈশাখী বয়ে যায় কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে। আজকেও শহরে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে হাল্কা বৃষ্টির বার্তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে উঠবে। হাওয়া অফিস বলছে, হালকা বৃষ্টির হলেও আগামী দু’তিন দিনে কলকাতার তাপমাত্রা বাড়বে, বাড়বে অস্বস্তি।