বর্ষায় উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্স এলাকাকে বন্যা পরিস্থিতির হাত থেকে রেহাই পেতে ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন তৈরি করা হোক। শুক্রবার বিধানসভায় এই নিয়ে বিশেষ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হল। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। বিরোধিতা জানিয়েছে বিজেপি।
বিধানসভায় এই নিয়ে প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই প্রস্তাবটি পাশ হলে তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন যে, ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন অবিলম্বে তৈরি করা হোক। তিনি আরও বলেন যে, যদি ইন্দো-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন, ইন্দো-নেপাল যৌথ নদী কমিশন থাকতে পারে, তা হলে ভুটানের সঙ্গে কেন যৌথ নদী কমিশন থাকবে না। তাঁর কথায়, 'ভুটানের অনেক নদী উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর প্রবল বৃষ্টির কারণে ওই নদীগুলির জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রচুর ক্ষতি হয়।'
অন্য দিকে, রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে সরব হন বিজেপি বিধায়করা। যা শুনে মানস বলেন, 'আমরা উত্তরবঙ্গকে বাঁচাতে চাইছি। আপনাদের সহযোগিতা চাই।'
বিজেপির চিফ হুইপ শঙ্কর ঘোষ বলেন যে, এই ধরনের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে। তাঁর সংযোজন, 'ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন নিয়ে কোনও প্রস্তাব তৈরি করতে পারে না রাজ্য বিধানসভা কারণ এটা দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। বিধানসভা সীমা অতিক্রম করছে।' স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, 'সমস্ত নীতি এবং নির্দেশাবলী মেনেই করা হয়েছে।' এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ি বলেন, 'এই প্রস্তাব সংবিধান বিরোধী। দুর্ভাগ্যের বিষয় হল অসাংবিধানিক বিষয় নিয়ে আমরা বিধানসভায় আলোচনা করছি।'
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিয়েছেন সুকান্ত। যা ঘিরে সরগরম রাজনীতির ময়দান। সুকান্ত বলেছেন, 'আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের কী কী সাদৃশ্য রয়েছে, তা বলেছি। প্রস্তাব দিয়েছি, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এই প্রস্তাব দিয়েছি। এবার প্রধানমন্ত্রী বিচার করবেন। যদি যুক্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গের অংশ হিসাবে, তাহলে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বেশি পরিমাণে পাওয়া যাবে। উন্নয়ন হবে। আশা করি, রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকবে না। সহযোগিতা পাব।'